‘আগামী নির্বাচনে বিএনপির হ্যাটট্রিক পরাজয় ঘটবে’
উত্তরণ প্রতিবেদন: বিএনপি এমন হাবভাব দেখাচ্ছে যেন তারা ক্ষমতায় আসবে! তারা যদি মনে করে ২০০১ সালে যা হয়েছে, ২০১৯ সালের নির্বাচনে তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে, তা হলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। আগামী নির্বাচনে সবক্ষেত্রে ব্যর্থ বিএনপির হ্যাটট্রিক পরাজয় হবে, আর উন্নয়ন-অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক বিজয় ঘটবে। আমরা উন্নয়ন করেছি, আমরা অর্জন করেছি। সারা বিশ্বে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে প্রশংসিত ও সমাদৃত করেছেন। বাংলাদেশের জনগণ তৃণমূলের নির্বাচনে তার প্রমাণ দিয়েছে। ইনশাল্লাহ জাতীয় নির্বাচনেও আমরাই বিজয়ী হব।
গত ৭ জুন রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঐতিহাসিক ৭ জুন ৬-দফা দিবস উপলক্ষে যৌথভাবে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত আলোচনায় আওয়ামী লীগ নেতারা এ কথা বলেন। ঢাকাসহ সারাদেশেই যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়।
ঐতিহাসিক ৭ জুনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেন, আজকে আমরা বলতে পারি ২০০৯ সালে সরকার গঠনের সময় এই দেশে গড় আয় ছিল ৫০০ ডলার। সেই দেশে আজকে গড় আয় ১ হাজার ৬০০ মার্কিন ডলারের দিকে চলে গেছে। এরই নাম হচ্ছে অর্থনৈতিক মুক্তি। আজকে সারা পৃথিবী থেকে প্রশংসা এবং সমর্থন কুড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আপনাকে রক্ষা করতে পারি নাই। ঘাতকের নির্মম বুলেটে আপনি আজ টুঙ্গিপাড়ায় শায়িত আছেন। টুঙ্গিপাড়ার কবর থেকে বাংলার ১ কোটি মানুষের নেত্রী শেখ হাসিনাকে আপনি দোয়া করেন। আপনি দোয়া করেন আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মীকে, যাতে আমরা আপনার অসমাপ্ত কাজটুকুকে আপনারই কন্যার নেতৃত্বে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। মনু মিয়াদের সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে পারি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার উদ্দেশে বলেন, ২০১৮ সাল হবে জনগণের বছর। তারা ক্ষমতায় আসবে এমন একটা ভাব। তারা (বিএনপি) মনে করেছেন, ২০০১ সালে যা হয়েছে ২০১৯ সালেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। এটা যদি মনে করেন, তা হলে বোকার স্বর্গে বাস করছেন। ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সাইকেল ফেডারেশন পর্যন্ত বিলুপ্ত করেছিল। সাইকেল ফেডারেশনের সাথে নির্বাচনের কি সম্পর্ক? বেগম জিয়ার পরামর্শে তারা সাইকেল ফেডারেশন পর্যন্ত সেদিন বাতিল করেছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব ওইদিন আর ফিরে আসবে না। ২০১৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আমরা বিজয়ী হব এবং বিজয়ের হ্যাটট্রিক করব। আপনারা নিজেদের ভুলে একবার ইলেকশন করেন নি। ২০০৮ সালে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পাবে না। ২০১৮ সালের আগামী নির্বাচনে কি হবে? আমি এ মুহূর্তে বলতে পারছি না? তবে পরাজয়ে আপনাদের হ্যাটট্রিক হবে, এটা বলতে পারি। আর কি জবাব দেব? তিনি বলেন, আমরা উন্নয়ন করেছি। আমরা অর্জন করেছি। সারাবিশ্বে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে প্রশংসিত ও সমাদৃত করেছেন। বাংলাদেশের জনগণ তৃণমূলের নির্বাচনে তার প্রমাণ দিয়েছে। আমরা তৃণমূলে শতকরা ৯০টি আসনে বিজয়ী হয়েছি। ইনশাল্লাহ জাতীয় নির্বাচনেও আমরাই বিজয়ী হব।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি, ডা. দীপু মনি এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, একেএম এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ এবং সাদেক খান প্রমুখ।
৬-দফা দিবস পালিত
নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হয়েছে ঐতিহাসিক ৬-দফা দিবস। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক ৬-দফা দাবি দিবস উপলক্ষে ৭ জুন সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। এ সময় কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলীয় নেতাদের নিয়ে জাতির প্রতিকৃতিতে আরেকবার পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শেখ হাসিনা।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয় আর বিএনপির হ্যাটট্রিক পরাজয় হবে। বিএনপি আন্দোলনের হুমকি দিয়ে মাঠে না নামা এবং দেশের হাওড়াঞ্চল ও দক্ষিণ উপকূলসহ কোনো অঞ্চলে দুর্যোগকালে জনগণের পাশে না থাকায় তারা (বিএনপি) জনগণের আস্থা হারিয়েছে। এ কারণেই আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হ্যাটট্রিক জয় হবে।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, মহিলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।