বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নামমুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা

আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং আমাদের ভুলে যাওয়া অতীত

তিনি জামাতে মওদুদীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ। তিরিশ লক্ষ শহীদের রক্ত আর চার লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে যে রাষ্ট্রটি ১৯৭১ সালে প্রবল রক্তক্ষরনের মধ্য দিয়ে জন্মলাভ করেছিল সেই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মাননীয় সমাজ কল্যান মন্ত্রী। কিংবদন্তির মতো তার বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবন। বাংলাদেশের ইসলামী রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব। এ পর্যন্ত ঠিক আছে। কিন্তু তারপর?

আসুন ফিরে দেখি একাত্তর।আপাতঃ সৌম সাদাসিদে বলে প্রতিয়মান মানুষটার পেচনে যে বীভত্স হত্যাকারীর মুখ লুকিয়ে আছে তার প্রতিফলনে কেমন করে হারিয়ে যায় সকল ইসলামী মুল্যবোধ! কেমন করে ক্ষতিগ্রস্থ করে আমাদের বিশ্বাস! করে তোলে অনেককেই দেউলিয়া!
মুজাহিদ কোনো সাধারন যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না। তিনি ছিলেন ইতিহাসের এই দ্বিতীয় বৃহত্তম গণহত্যা আর ধ্বংসযজ্ঞের কো-অর্ডিনেটরদের একজন। তিরিশ লক্ষ বাঙ্গালী হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ৪ লক্ষ নির্যাতিতার উপর কৃত সকল মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্যে দায়ী।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ যে সংগঠনটির নাম জড়িয়ে আছে তার নাম আল-বদর। মুজাহিদ ছিলেন সেই আল-বদর বাহিনীর প্রধান। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দলীয় আদর্শ অনুযায়ী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যা, লুটপাট ও নারী নির্যাতনে সহযোগিতা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক এএসএম সামছুল আরেফিনের লেখা ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান’ বইয়ের ৪২৮ পৃষ্ঠায় মুজাহিদকে পূর্ব-পাকিস্তান আল-বদর বাহিনীর কেন্দ্রীয় সংগঠক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তত্কালীন সময়ে ইসলামী ছাত্রসংঘের সাধারন সম্পাদক ছিলেন তিনি, নব্য জামানার মুনাফিকদের সর্দার গোলাম আযমের প্রিয় শিষ্য। যার হাত দিয়ে বাস্তবায়ন ঘটেছে অসংখ্য গণহত্যার নীল নকশা। বাংলার বুদ্ধিজীবি হত্যার মূল পরিকল্পনার অন্যতম রুপকার ছিলেন এই মুজাহিদ। তার নেতৃত্বাধীন আলবদর বাহিনী বিজয়ের আগমুহূর্তে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে এদেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবিদের। আর সেজন্যে বাংলার জনগন ভালবেসে তার নাম দিয়েছিল মইজ্যা রাজাকার।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ফকিরাপুল, নয়াপল্টন এলাকায় বিভিন্ন বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তার মধ্যে একটি হলো শেখ ভিলা, ৩/৫ নয়াপল্টন। তবে তার প্রধান আড্ডা ছিল ফকিরাপুল গরম পানির গলিতে ফিরোজ মিয়ার ১৮১ নং (এখন ২৫৮ নং) বাড়িটি। ‘৭১-এ মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বর্তমানে নগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক জিএম গাউস, মুক্তিযোদ্ধা ও কলামিস্ট মাহবুব কামালের সাক্ষ্য অনুযায়ী জানা গেছে ফিরোজ মিয়া ছিলেন ফকিরাপুল এলাকার রাজাকার কমান্ডার। অবশ্য তার বাড়িটি শুধু ফকিরাপুল নয়, গোটা ঢাকার রাজাকারদের অন্যতম ঘাঁটি ছিল। এখানেই অনুষ্ঠিত হতো রাজাকারদের বিভিন্ন সভা, সশস্ত্র ট্রেনিং ইত্যাদি। এখান থেকেই পরিচালিত হতো রাজাকারদের বিভিন্ন অপারেশন, রাজাকার রিক্রুটমেন্ট। এখানে এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির লোকদের ধরে এনে নির্যাতন চালানো হতো। আর ফিরোজ মিয়া গংয়ের নীতিনির্ধারক, পৃষ্টপোষক ছিলেন জনাব আলী আহসান মুজাহিদ। ছাত্রসংঘের কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে তাঁর নেতৃত্বেই পরিচালিত হতো যাবতীয় মুক্তিযুদ্ধবিরোধী (তার ভাষায় ভারতীয়দের মদদে চলমান বিচ্চিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে) সহিংস তৎপরতা।
মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বকোষে (প্রথম খণ্ড) তৎকালীন ফকিরাপুল এলাকার লোকজন এবং মুক্তিযোদ্ধারা যে সাক্ষ্য দিয়েছেন তা উল্লেখ করা যেতে পারে।
সেখানে জিএম গাউস বলেছেন, ‘৭০-এর মাঝামাঝি সময় থেকে আমরা ফকিরাপুল এলাকার ভাড়াটিয়া আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে চিনতাম জামায়াত ও ইসলামী ছাত্র সংঘের লোক হিসেবে। এলাকায় সাংগঠনিক তৎপরতা চালাতেন তিনি। কেন্দ্রীয় সমাবেশে এলাকা থেকে লোক নিয়ে যেতেন, এলাকার ছেলেদের ছাত্র সংঘে যোগদানের ব্যাপারে প্ররোচিত করতেন। ‘৭১-এর মার্চের পর মুজাহিদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ফকিরাপুলে রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়। যার নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয় ফিরোজ মিয়া ওরফে ফেরু মেম্বারকে। আর কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে মুজাহিদের অপতৎপরতা শুধু ফকিরাপুল এলাকায় নয়, বিস্তৃত ছিল পুরো ঢাকা শহরে। মুজাহিদের সরাসরি নির্দেশেই পরিচালিত হয়েছে ফকিরাপুল এলাকায় রাজাকার বাহিনীর তৎপরতা, অস্ত্র ট্রেনিং, রিক্রুটমেন্ট ইত্যাদি। তিনি এলাকায় যাবতীয় দুষ্কর্মে সহায়তা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময় এ এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও স্বাধীনতার পক্ষের বুদ্ধিজীবীদের ধরে এনে অত্যাচার-নির্যাতন এমনকি হত্যা করার উদ্দেশ্যে গঠিত আলবদর বাহিনীর নেতা ছিলেন আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ।
আবদুস সালাম বলেছেন, ‘৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় ফকিরাপুল গরম পানির গলির ফিরোজ মিয়ার বাড়িটি ছিল রাজাকারদের অন্যতম নির্যাতন কেন্দ্র। এই ফিরোজ মিয়া গংয়ের নীতিনির্ধারক বা পরামর্শদাতা ছিলেন মুজাহিদ। অবশ্য কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে শুধু ফকিরাপুল নয়, মুজাহিদের অপতৎপরতা ছিল গোটা ঢাকায়। বিজয়ের পর আমি আমার সহযোদ্ধাদের নিয়ে ফিরোজ মিয়ার বাড়ি থেকে প্রচুর মূল্যবান দলিল ও ছবি উদ্ধার করি। কাগজপত্রগুলোতে ঢাকা শহরের রাজাকারদের তালিকা, বায়োডাটা, ছবি ও তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের দলিল ছিল যা ছাপা হয়েছে একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায় বইটিতে।
কলামিস্ট মাহবুব কামাল বলেছেন, ফিরোজ মিয়ার বাড়িটি ছিল ষড়যন্ত্রের ঘাঁটি। এই বাড়িতে বসেই ফেরু মেম্বার ও আলী আহসান মুজাহিদ বিভিন্ন গুঁটি চালতেন। মুজাহিদের নির্দেশে ফিরোজ মিয়া ও তার সাগরেদরা মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে তল্লাশি চালাত। তখনকার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোবেদ আলীর বাড়িতে বেশ কয়েকবার তল্লাশি চালানো হয়েছে। আমাদের বন্ধু মুক্তিযোদ্ধা নাজুর বাড়িতেও অনেকবার হানা দিয়েছে তারা। আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে নাজু নিখোঁজ হয়ে যায়। ধারণা করা হয় মুজাহিদের নির্দেশে ফিরোজ মিয়া গংই তাকে হত্যা করেছে। আমার এক চাচাতো ভাই মহসিন চাকরি খুঁজতে রাজশাহী থেকে ঢাকা আসে। সে আমাদের বাসাতেই থাকত। নিয়মিত নামাজ পড়ত। যুদ্ধের মাঝামাঝি সময় তাকে খুব অস্থিরচিত্ত ও ভীত দেখাচ্ছিল। জিজ্ঞেস করে জানলাম আলী আহসান মুজাহিদ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, তাকে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিতে বলা হয়েছে এবং হুমকি দিয়েছে রাজাকার বাহিনীতে যোগ না দিলে তাকে মেরে ফেলা হবে। মুজাহিদের হাত থেকে বাঁচাতে তাকে আমরা রাজশাহী পাঠিয়ে দিই। এখন সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত।’
মুজাহিদের রিক্রুট ফিরোজ মিয়া ফকিরাপুলে ৩০০ সদস্যের একটি রাজাকার প্লাটুন গড়ে তোলে। এলাকার প্রবীণ বাসিন্দাদের সাক্ষ্য থেকে জানা যায়, যুদ্ধের সময় সে ফকিরাপুল ও আরামবাগ এলাকার শত শত বাঙালিকে হত্যা করেছে। নির্যাতন করেছে এলাকার মেয়েদের ওপর।
আসুন মুজাহিদের নিজের জবানিতে দেখে আসি একাত্তর।’৭১-এর ছাত্র সংঘ নেতা ও বদর বাহিনীর প্রধান মুজাহিদের অপতৎপরতার ছবিও প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায়। এই সময় আলী আহসান মুজাহিদ নিয়মিত রাজাকার এবং ইসলামী ছাত্রসংঘের সভা-সমাবেশে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিতেন।
‘৭১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরে ছাত্র সংঘের এক জমায়েতে `বিপুল করতালীর মধ্যে’ আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ ঘোষনা দেয় `ঘৃন্য শত্রু ভারতকে দখল করার প্রাথমিক পর্যায়ে আমাদের আসাম দখল করতে হবে। এজন্য আপনারা সশস্ত্র প্রস্তুতি গ্রহন করুন।’
১৫ অক্টোবর ১৯৭১ সালে প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়- `রাজাকার ও আলবদরদের ভুমিকা সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করায় পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি জনাব আলী আহসান মুজাহিদ জনাব ভুট্টো, কাওসার নিয়াজী ও মুফতি মাহমুদের তীব্র সমালোচনা করেন।… এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, `পুর্ব পাকিস্তানে দেশপ্রেমিক যুবকেরা ভারতীয় চরদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য এগিয়ে এসেছে এবং রাজাকার, আলবদর ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সদস্য হিসেবে জাতির সেবা করছে। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে কতিপয রাজনৈতিক নেতা যেমন জনাব জেড এ ভুট্টো, কাওসার নিয়াজী, মুফতি মাহমুদ ও আসগর খান রাজাকার, আলবদর ও অন্যান্য দেশহিতৈষী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করে বিষোদগার করছেন। এসব নেতার এ ধরণের কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য এবং এ ব্যাপারে কঠোর মনোভাব গ্রহন করার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানান। পরিশেষে ছাত্র সংঘ নেতা ক্লাসে যোগদানের জন্য এবং সেইসঙ্গে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার জন্য আলবদর ও দেশ হিতৈষী ছাত্রদের প্রতি আহবান জানান।’
পাকিস্থান ছাত্রসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ ১৯৭১ সালের ১৭ অক্টোবর রংপুরে পাকিস্তান ছাত্রসংঘের এক সভায় আল-বদর বাহিনী গড়ে তুলতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন।ওই সভায় মুজাহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, ইসলামবিরোধী শক্তিদের প্রতিহত করতে হবে। তিনি যুবকদের সংগঠিত করে আল-বদর বাহিনীতে যোগ দেয়ার উপর গুরুত্ব দেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পূর্ব-পাকিস্তান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তখনকার পরিসি’তি নিয়ে ইয়াহিয়া সরকারকে মাসে দু’বার গোপন প্রতিবেদন পাঠাত। ‘সিক্রেট রিপোর্ট অন দ্য সিচ্যুয়েশন ইন ইস্ট পাকিস্তান’ নামে অক্টোবরের দ্বিতীয় ভাগের প্রতিবেদনে (১৩ নবেম্বর ১৯৭১ স্বরাষ্ট্র সচিব স্বাক্ষরিত) মুজাহিদের এ নির্দেশের কথা উল্লেখ করা আছে। অক্টোবরে দ্বিতীয় ভাগের সরকারি এই গোপন প্রতিবেদনে (১৩ নভেম্বর ১৯৭১ স্বরাষ্ট্র সচিব স্বাক্ষরিত) বলা হয়েছে, ১৭ অক্টোবর রংপুরে পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘের এক সভায় আলী আহসান মো: মুজাহিদ আল বদর বাহিনী গড়ে তুলতে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ইসলামবিরোধী শক্তিদের প্রতিহত করতে হবে। এজন্য যুবকদের সংগঠিত করে আল-বদর বাহিনীতে যোগ দেওয়ার ওপরে তিনি গুরুত্ব দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন এ টি এম আজহারুল ইসলাম।
ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ৭ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামী আল-বদর দিবস পালন করে। দলের নেতারা দিবস পালনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আল-বদর বাহিনীতে জনগণকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয় ‘যারা পকিস্তান চায়না তারা আমাদের শক্র। পাকিস্তানের অখন্ডতা রুখতে হবে ও শক্রদের প্রতিহত করতে হবে।
২৫ অক্টোবর ’৭১ তারিখে এক বিবৃতিতে মুজাহিদ ১৭ রমযান ‘বদর দিবস’ পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা আজ ইসলামবিরোধী শক্তির চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এ পবিত্র দিবসে আমরা জাতির স্বার্থে এবং এদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আত্মোৎসর্গের শপথ গ্রহণ করব। (সূত্র- একাত্তরের ঘাতক দালালরা কে কোথায়)।
১১ ডিসেম্বর দৈনিক আজাদে প্রকাশিত একটি ছবির ক্যাপশন ছিল : ‘গতকাল গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি প্রদান করিয়া আলবদর আয়োজিত পথসভায় বক্তৃতা করিতেছেন আলবদর প্রধান জনাব মুজাহিদ।’
আলী আহসান মুজাহিদের স্বাধীনতাবিরোধী তৎপরতা ও নৃশংসতা ‘৭১-এই শেষ হয়ে যায়নি। এর ধারাবাহিকতা চলছে এখনো। আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল। সাপ্তাহিক বিচিত্রায় ১১ নভেম্বর ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭৮ সালে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার ভিন্নমতাবলম্বী ছাত্রনেতা মাওলানা আবদুস সোবহানকে শিবির কর্মীরা কোরআন পাঠরত অবস্থায় নির্মমভাবে হত্যা করে। বিশেষ সূত্রে জানা যায়, এই হত্যা অভিযানের নেতৃত্ব দেন ‘৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঘাতক আলবদর বাহিনীর প্রধান আলী আহসান মুজাহিদ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *