উন্নয়নের মেগা প্রকল্প : এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ
দেশকে দ্রুতগতিতে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মহাপরিকল্পনা নিয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার ও নিরবচ্ছিন্ন উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনার জন্য প্রয়োজন হয় ধারাবাহিকতার। সেই লক্ষ্যে সাধারণ মানুষের নিরঙ্কুশ সমর্থনে ২০১৪ সালে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে উন্নয়ন অব্যাহত রাখে আওয়ামী লীগ সরকার। ২০০৯ সালে গৃহীত ভিশন-২০২১ এর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার অনেকগুলো মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করে। এই মহাপরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়নের পথে পাল্টে যাচ্ছে দেশের অবহেলিত অঞ্চলগুলোর আর্থ-সামাজিক চিত্র। এই মহাপরিকল্পনাগুলোকে ২০১৪ সালে ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের আওতায় নিয়ে এসে পুরোদমে কাজ শুরু করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের অগ্রগতি তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনেÑ
পায়রা সমুদ্রবন্দর
পদ্মা সেতুর জন্য ৫৩ হাজার টন পাথর নিয়ে চীন থেকে ‘ফরচুন বার্ড’ নামের একটি জাহাজ নোঙরের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছে বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ৮টি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম পায়রা সমুদ্রবন্দর। গত ১৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বন্দরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। চট্টগ্রাম ও মংলার পর তৃতীয় সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম শুরুর মধ্য দিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অর্থনৈতিক কর্মকা-ে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। নিত্যদিন ঝড়-জলোচ্ছ্বাসকে জয় করে টিকে থাকা দক্ষিণের এই মানুষের মধ্যে উন্নতি সমৃদ্ধির নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।
২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পায়রা বন্দরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই আড়াই বছরের মধ্যে পায়রা বন্দর নির্মাণকে সামনে রেখে বদলে যেতে শুরু করেছে পটুয়াখালীর পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের চিত্র। বন্দরের কার্যক্রমের উদ্বোধন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার একটি অংশ মাত্র। পায়রা বন্দর পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ শুরু করবে ২০২৩ সাল থেকে।
প্রায় ৬ হাজার একর জমির ওপর পূর্ণাঙ্গ বন্দর ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সবগুলো কাজ বন্দরের মূল অবকাঠামো, বন্দর ব্যবস্থাপনা, ড্রেজিং, নদী তীরবর্তী দায়িত্ব, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কার্যক্রম, বিমানবন্দর নির্মাণ, ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র, কার্গো উঠানামা করার জন্য ১ হাজার মিটার দীর্ঘ বহুমুখী টার্মিনাল নির্মাণ, কন্টেইনার উঠানামা করার জন্য ১১ হাজার মিটার দীর্ঘ দুটি টার্মিনাল নির্মাণ, কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা আমদানির জন্য ৫০০ একর জমির ওপর ড্রাই বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ, একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ, একটি লিকুইড বাল্ক টার্মিনাল, নদী পথে যোগাযোগের সুবিধার্থে একটি ফেরি টার্মিনাল নির্মাণ, জাহাজ নির্মাণ ও মেরামত কারখানা নির্মাণ, ২ হাজার একর জায়গা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ, ঢাকার সাথে পায়রা বন্দরের রেল যোগাযোগ চালুকরণ, তীরবর্তী সমুদ্র থেকে সম্পদ আহরণের জন্য অফশোর ফ্যাসিলিটি নির্মাণÑ এমন ১৯টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি ১৩টির মধ্যে ৭টি জিটুজি এবং ৬টি সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে করা হচ্ছে। মূল চ্যানেল খননের কাজে ইতোমধ্যে বিশ্বের একটি খ্যাতনামা কোম্পানির সাথে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
মূল চ্যানেলটির গভীরতা হবে ১৬ থেকে ২১ মিটার, যেখানে চট্টগ্রাম বন্দরের মূল চ্যানেলের সর্বোচ্চ গভীরতা ৯.২ মিটার। আউটার এ্যাঙ্করেজ থেকে রাবনাবাদ চ্যানেলে ঢোকার পথে পানির সর্বনি¤œ গভীরতা প্রায় ৫ মিটার। চ্যানেলের ভেতর এই গভীরতা ১৬ থেকে ২১ মিটার। চ্যানেলের ৩৫ কিলোমিটার এলাকায় ড্রেজিং করলে জোয়ারের সময় ১৪ মিটার গভীরতা তৈরি হবে। চট্টগ্রাম বন্দরে রয়েছে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ২ মিটার। পায়রাতে ২৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ আসতে পারবে। চট্টগ্রাম বন্দরে আসে সর্বোচ্চ ১৮৬ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ।
প্রায় ৬ হাজার একর জায়গার ওপর গড়ে উঠছে সমগ্র পায়রা সমুদ্রবন্দর। বিপুল পরিমাণ ব্যবহারযোগ্য জায়গা পড়ে আছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়। এসব এলাকায় সরকারি এবং বেসরকারি কনটেইনার ডিপো, শিল্প এলাকা, ইপিজেড, আইজেড ইত্যাদি গড়ে তোলা সম্ভব। এই বন্দরকে ঘিরে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে।
এই বন্দর পূর্ণাঙ্গ চালু হলে এখানে সার কারখানা, জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ ভাঙা কারখানাসহ বিভিন্ন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে। এ ছাড়া পটুয়াখালী হয়ে কুয়াকাটা সৈকত পর্যন্ত চার লেন বিশিষ্ট সড়ক যোগাযোগ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। ফলে পায়রা বন্দরের সাথে সুগম হবে দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ। ২০১৮ সালে পদ্মা ব্রিজ নির্মাণ শেষ হলে রেলপথের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য জেলার সাথে যুক্ত হবে পায়রা বন্দর। পায়রা থেকে বড় নদীতে পড়ার দুটি রুট। একটি পটুয়াখালী হয়ে বরিশাল। অন্যটি ভোলার পশ্চিম থেকে শুরু করে কাজল এবং তেঁতুলিয়া নদী হয়ে কালীগঞ্জ। আকাশ পথে যোগাযোগের জন্য একটি বিমানবন্দর গড়ে উঠবে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের সূত্রমতে, ১৩ বছরের এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পায়রা বন্দরকে ঘিরে গড়ে উঠবে শক্তিশালী নানা প্রকার স্থাপনা। ফলে প্রতিহত হবে ঝড়ের আঘাত। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহজ হবে এবং উপকূলজুড়ে গড়ে তোলা হবে সবুজ বেষ্টনি এবং ইকো-ট্যুরিজম। পর্যটন উন্নয়নের লক্ষে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কমপ্লেক্স, জাতির পিতার ভাস্কর্য স্থাপন, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, জেটি/ল্যান্ডিং স্টেশন নির্মাণ, মেরিন ড্রাইভ, ইকোপার্ক, মেরিন পার্ক ও সী-অ্যাকুরিয়াম ও আন্তর্জাতিকমানের স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে।
পায়রা বন্দরের সম্পূর্ণ কর্মযজ্ঞ শেষ হলে বন্দর সংলগ্ন এলাকার পাশাপাশি সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি গতি লাভ করবে। দীর্ঘ মহাসড়ক, রেলপথ, ফেরি টার্মিনাল, বিমানবন্দর ইত্যাদি নির্মাণের ফলে ঘটবে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের ফলে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান লাভের সুযোগ বাড়বে। একই সাথে স্থানীয়ভাবে নতুন নতুন অনেক ব্যবসা গড়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে।
ঢাকা ও চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
রাজধানী ঢাকা এবং বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে সরকার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছে।
প্রথম ধাপের পাইলিং শেষে এখন সুপার স্ট্রাকচারের কাজ শুরুর অপেক্ষায় রাজধানী ঢাকার প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। শাহজালাল বিমানবন্দরের সামনে থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত যাবে এই এক্সপ্রেসওয়ে। প্রকল্পটির সুপার স্ট্রাকচারের কাজ নভেম্বরে শুরু করবে বলে জানিয়েছে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড। এরই মধ্যে কয়েক দফায় সুপার স্টাকচারের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ঢাকায় আনা হয়েছে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প সূত্র জানায়, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী) পর্যন্ত যাবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। প্রথমেই বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত সুপার স্ট্রাকচারের কাজ হবে।
তিন ধাপে নির্মিতব্য এই প্রকল্প ২০১৯ সালে শেষ হবে। প্রথম ধাপে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত, দ্বিতীয় ধাপে বনানী থেকে মগবাজার পর্যন্ত এবং তৃতীয় ধাপে মগবাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত। এর মধ্যে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মিত হবে রেললাইনের পাশ দিয়ে। প্রকল্পের প্রথম ধাপে বনানী পর্যন্ত ৬৯ একর ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। জমিতে থাকা অবকাঠামোগুলো অপসারণ করে বিনিয়োগকারীকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপের ক্ষতিপূরণের অর্থও পরিশোধ করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপ মগবাজার এবং তৃতীয় ধাপ যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। এ দুই ধাপের পুনর্বাসন কর্মপরিকল্পনা করে খুব শিগগিরই অবকাঠামো অপসারণ শুরু হবে।
বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বিমানবন্দরের বিপরীত দিকে কাউলায় ১৫.৯৫ একর জায়গায় মাটি ভরাট করে প্রকল্পের সাইট অফিস, স্টেকইয়ার্ড ও কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড নির্মাণ করেছে। এ ছাড়াও ব্যাচিং প্যান্ট স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন মূল নির্মাণকাজ প্রকল্পের পাইল ডাইভিংয়ের কাজ চলমান আছে। এ পর্যন্ত ৩৩৮টি পাইল ও ৯টি পাইল ক্যাপ বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পটির অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী, প্রকল্পের রুটের বেশির ভাগ অংশই যাবে বিমানবন্দরের পাশের রেললাইনের ওপর দিয়ে এবং মহাখালী ও মগবাজার রেললাইনের ওপর দিয়ে। এর মধ্যে ৩১টি র্যাম্প থাকবে।
প্রকল্প অনুযায়ী ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়াল সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি)-এর আওতায় এই প্রকল্পে সরকারের অর্থায়ন ২ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা। বাকিটার জোগান দেবে ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। তিন ধাপে নির্মিত হবে এই এক্সপ্রেসওয়েটি। নগরীর লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথে উঠানামা জন্য র্যাম থাকবে ১৬টি। চীন ও বাংলাদেশ জিটুজি পদ্ধতিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
চার লেনের এই এক্সপ্রেসওয়ে বাস্তবায়ন হবে তিন ধাপে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে হবে বারিক বিল্ডিং থেকে কাটগড় পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮ কিলোমিটার অংশ। যাতে বন্দর, ইপিজেডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে থাকবে ৮টি র্যাম্প। দ্বিতীয় ধাপে বারিক বিল্ডিং থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তা হবে। আর তৃতীয় ধাপে এটি সংযুক্ত করা হবে লালখান বাজার পয়েন্টে।
বন্দর নগরীতে নির্মিত অন্যান্য উড়াল সেতুগুলোর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন আছে। তাই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে বেশি কার্যকর করার ওপর জোর দিচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এ প্রকল্পে খরচ হবে ৩ হাজার ২০০ টাকা।
ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (মেট্রোরেল) প্রকল্প
পাশের দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশের মহানগরীগুলোয় দ্রুত চলাচল সুবিধার জন্য মেট্রোরেলের মতো গণপরিবহন ব্যবস্থা আগেই চালু হয়েছে। আমাদের দেশে এই প্রথমবারের মতো ঢাকার উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১০ কিলোমিটার মেট্রোরেল স্থাপন করা হচ্ছে। পুরো কাজ শেষ হবে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে। তবে এর আগে ২০১৯ সালের মধ্যে উত্তরা থেকে ফার্মগেট অংশ চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রথমে পরিকল্পনা ছিল উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ চালুর। ২৭ জুন ২০১৬-তে প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা ফার্মগেট পর্যন্ত চালু করার পরামর্শ দেন।
মেট্রোরেল প্রকল্পের লাইন-৬ এর কাজ শুরু হয়েছে এবং এয়ারপোর্ট-খিলক্ষেত-বারিধারা-বাড্ডা-রামপুরা-মৌচাক হয়ে কমলাপুর এবং খিলক্ষেত-পূর্বাচল কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-১ এবং গাবতলী-টেকনিক্যাল-মিরপুর-১, ১০ ও ১৪-বনানী-গুলশান-২ হয়ে ভাটারা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-৫ এর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চলমান রয়েছে।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পে ব্যয় হবে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। মেট্রোরেলে ২৪ জোড়া ট্রেন ৪ মিনিট পরপর ১ হাজার ৮০০ যাত্রী নিয়ে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করবে। এর গতি হবে গড়ে ঘণ্টায় ৩২ কিলোমিটার, যদিও এটি সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার চলতে সক্ষম। পিক আওয়ারে ৪ মিনিট পরপর একটি ট্রেন এবং অফ-পিক আওয়ারে ৭ মিনিট পরপর একটি ট্রেন চলবে। শীতকালে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ও গ্রীষ্মকালে সকাল ৫টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ট্রেন চলবে। মেট্রোরেল প্রকল্পের অবকাঠামো ১০০ বছরের জন্য ডিজাইন করা হবে।
উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে শুরু হয়ে পল্লবী-রোকেয়া সরণি-খামারবাড়ী-ফার্মগেট-সোনারগাঁওহোটেল-শাহবাগ-টিএসসি- দোয়েল চত্বর-তোপখানা রোড দিয়ে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত যাবে মেট্রোরেল। এই রুটে থাকবে ১৬টি স্টেশন। অর্থাৎ, দুটি স্টেশনের মধ্যে গড় দূরত্ব হবে ১ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার। বেশি স্টেশন রাখার ফলে বিপুলসংখ্যক যাত্রী এর সুফল ভোগ করবে। স্টেশনগুলো হবে উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিল। উত্তরা থেকে মতিঝিল যেতে লাগবে ৩৮ মিনিট। স্টেশনগুলো হবে ওপরে এবং নিচ থেকে লিফট বা চলন্ত সিঁড়ির মাধ্যমে যাত্রীদের ওপরে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
প্রকল্পের টপোগ্রাফিক সার্ভে, ট্রাফিক সার্ভে, আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে, ইউটিলিটি ভেরিফিকেশন সার্ভে শেষ হয়েছে। প্রকল্পের ৮টি কাজের অংশের মধ্যে প্রথম অংশে ডিপোর ভূমি উন্নয়নের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। জাপানের টোকিও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড এই কাজ পেয়েছে। এসটিপির সুপারিশ অনুসারে নেওয়া হয়েছে মেট্রোরেল প্রকল্প। ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ডিএমআরটিডিপি) নামে মেট্রোরেল প্রকল্প একনেকে অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পে জাইকা দেবে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, বাকি ৫ হাজার ৩৯০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার।
মেট্রোরেল প্রকল্পটিতে কম্পন নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। মেট্রোরেলের লাইনের নিচে এমএসএস (ম্যাস স্প্রিং সিস্টেম) থাকবে। ম্যাস স্প্রিং সিস্টেমে বিশেষ ধরনের বিয়ারিং থাকে, যার কাজ হলো রেললাইনে যে কম্পন তৈরি হয় তা শোষণ করা। ফলে ট্রেন চলাচলের সময় আশপাশে তেমন একটা কম্পন অনুভূত হবে না।
মেট্রোরেল প্রকল্পটিতে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণেরও বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। সাধারণ ট্রেন ৩০ মাইল ঘণ্টায় চলার সময় ৭০-৭৫ ডিবিএ মাত্রার শব্দ তৈরি করে। মেট্রোরেলের ক্ষেত্রে শব্দ তৈরির মাত্রা সাধারণ ট্রেনের চেয়েও কম, যা মানবদেহের জন্য সহনীয়। এখানে উল্লেখ্য, ৮৫ ডিবিএ মাত্রার শব্দ ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত মানবদেহের জন্য সহনীয়। এ ছাড়া মেট্রোরেলের চলাচল পথে কিছু এলাকায় শব্দ শোষণকারী দেয়াল থাকবে। এই দেয়ালের ফলে শব্দের মাত্রা আরও কমে আসবে।
মেট্রোরেল প্রকল্পটিতে বিদ্যুৎচালিত আধুনিক ট্রেনে যাত্রীরা চলাচল করবে। ভিভিভিএফ (ভেরিয়েবল ভোল্টেজ ভেরিয়েবল ফ্রিকোয়েন্সি) ইনভার্টার সিস্টেমে চালিত ট্রেন চলার সময় অনেক কম শব্দ তৈরি করে, যা শব্দদূষণের পর্যায়ে পড়ে না। মেট্রোরেল প্রকল্পটি চালু হলে ব্যক্তিগত গাড়ি ও বাস ব্যবহারকারী অনেক যাত্রী মেট্রোরেলে যাতায়াত করবে। এর ফলে বায়ুতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ অনেক কমবে। বাসের ক্ষেত্রে বায়ুতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ ৫১ গ্রাম/যাত্রী-কিমি, ব্যক্তিগত গাড়ির ক্ষেত্রে এই পরিমাণ ১৬৮ গ্রাম/যাত্রী-কিমি। অন্যদিকে মেট্রোরেল যেহেতু বিদ্যুৎচালিত তাই বায়ুতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ নেই বললেই চলে। এসব বিবেচনায় মেট্রোরেল অন্যান্য পরিবহন ব্যবস্থার চেয়ে অনেক বেশি পরিবেশবান্ধবও বটে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
আওয়ামী লীগ সরকারের আরেকটি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ভারত, চীন, রাশিয়ার মতো উন্নত দেশগুলো গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ থেকে পারমাণবিক বিদ্যুতের দিকেই বেশি ঝুঁঁকছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে যেখানে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে বছরে ৩০ লাখ টন কয়লা লাগে, সেখানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে প্রয়োজন হয় ২৫ টন কয়লা। আর্থিক দিক থেকেও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অনেক লাভজনক। স্থাপনা ও পরিচালনার প্রাথমিক পর্যায়ে অন্য প্রকল্পের তুলনায় বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও পরবর্তীতে জ্বালানি খরচ অনেক কম থাকে। পরমাণু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ২০১৪ সালে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি লাভ করে।
এসব ভাবনাকে মাথায় নিয়েই সরকার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নেয়। ২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুরে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনায় কোম্পানি গঠন করতে সংসদে বিল পাস হয়। আইন অনুযায়ী, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকানা থাকবে বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের হাতে। আর কেন্দ্রটি পরিচালনার দায়িত্ব পাবে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ’।
৫০ বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতাসম্পন্ন এই প্রকল্প নির্মাণের লক্ষে ইতোমধ্যেই রুশ প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সাথে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন। রাশিয়ার এই প্রতিষ্ঠানটি ১২০০ করে মোট ২৪০০ মেগাওয়াটের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করবে; যাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১ লাখ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা)।
১৯৬১ সালে পরামাণু কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার পর ১৯৬৩ সালে প্রস্তাবিত ১২টি এলাকার মধ্য থেকে বেছে নেওয়া হয় রূপপুরকে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রায় ৫০ বছর আগের নেওয়া সেই উদ্যোগ সক্রিয় করে তোলা হয়। দ্রুত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ২০১০ সালে সংসদে প্রস্তাব পাস করে গঠন করা হয় একটি জাতীয় কমিটি। ওই বছরই রাশিয়ার সাথে একটি কাঠামো চুক্তি করে সরকার এবং ২০১১ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে দুই দেশ চুক্তি করে। প্রস্তাবিত এই কেন্দ্রের জন্য আগেই অধিগ্রহণ করা হয় ২৬২ একর জমি।
অ্যাটমস্ট্রয়ের নকশায় পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্বলিত ‘সর্বাধুনিক তৃতীয় প্রজন্মের প্রযুক্তি’ দিয়ে রূপপুরে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে, তাই নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ের কোনো অবকাশ নেই। চুক্তি অনুযায়ী, এই কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাশিয়াই ফেরত নিয়ে যাবে।
মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল
দেশে গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে অপ্রতুল মজুদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার কক্সবাজারের মহেশখালীতে লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল তৈরির উদ্যোগ নেয়। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর মধ্যে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
২০১৬ সালের ১৮ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জির সাথে মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল বাস্তবায়ন চুক্তি এবং টার্মিনাল ব্যবহার চুক্তি করে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ঘনমিটার এলএনজি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন টার্মিনালটি নির্মাণ হলে তা থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। এই তরলীকৃত গ্যাস রূপান্তর করে দেশের গ্যাস বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহ করা হবে।
এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে এক্সিলারেট এনার্জি প্রায় ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে; যা বাংলাদেশে শেভরনের পর যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানির সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হতে যাচ্ছে। এক্সিলারেট এনার্জি টার্মিনাল নির্মাণ করার পর বাংলাদেশ তা ১৫ বছর ব্যবহারের জন্য চুক্তি করেছে।
চুক্তি অনুযায়ী এলএনজি আমদানি করতে বছরে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় দেড়শ কোটি ডলার। টার্মিনাল ভাড়া বাবদ বছরে দিতে হবে ৯ কোটি ডলার এবং কর ও ভ্যাট বাবদ দিতে হবে ২ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা।
শিল্প ও বিদ্যুতের উন্নয়নে দেশের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে গেলে দৈনিক ৩ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হবে, যেখানে বর্তমানে উৎপাদনের পরিমাণ ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এই চাহিদা মেটাতে সরকার শুধু মহেশখালীর এই ভাসমান টার্মিনাল ছাড়াও ভূমিতে আরও ৪টি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরের কাছেও একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করার পরিকল্পনা সরকারের হাতে আছে।
শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন’ (কম্পিউটার এবং ভাষা শিক্ষণ ল্যাব)-এর আওতায় প্রথম পর্যায়ে সারাদেশে ২ হাজার ১টি কম্পিউটার ল্যাব এবং ৬৫ ল্যাংগুয়েজ ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর উদ্বোধনকালে শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আরও একধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞানের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে আমাদের শিক্ষার্থীরা তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান অর্জন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ডিজিটাল সেন্টারের মতো শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবগুলোও কর্মসংস্থানের সৃষ্টির পাশাপাশি আইসিটি ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের মাধ্যমে প্রতিবছর ১০ লাখ শিক্ষার্থী আইসিটি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পাবে। শিক্ষার্থীদের আইসিটি ক্ষেত্রে সামর্থ্য বাড়ানো ও ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে এসব ল্যাব।
প্রসঙ্গত, প্রতিটি ল্যাব মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, সাইবার সেন্টার ও ট্রেনিং ল্যাব হিসেবে ব্যবহƒত হবে। এখানে শিক্ষার্থী ছাড়াও আগ্রহী তরুণ-তরুণীরা আইটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। ২০ শিক্ষার্থী বসার মতো ল্যাব কক্ষ বরাদ্দ করা হয়েছে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। অন্যদিকে ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাবগুলোতে থাকবে বিশ্বের প্রধান ৯টি ভাষা শেখার সুযোগ। এগুলো হচ্ছেÑ ইংরেজি (আমেরিকান, ব্রিটিশ ও অস্ট্রেলিয়ান), চীনা, কোরিয়ান, জাপানিজ, ফরাসি, স্প্যানিশ, জার্মান, আরবি ও রুশ। প্রতিটি ল্যাবে আইটি সরঞ্জামের মধ্যে থাকবে ১৭টি কম্পিউটার, একটি লেজার প্রিন্টার, একটি স্ক্যানার, একটি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর (স্ক্রিনসহ), দ্রুতগতির ইন্টারনেটের জন্য থাকবে থ্রি-জি রাউটার ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র।