জাতীয়

গণতন্ত্র ধ্বংস করাই ছিল বিদ্রোহের উদ্দেশ্য: হাইকোর্ট

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করে গণতন্ত্র ধ্বংস করাই তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল বলে পর্যবেক্ষণে বলেছেন আদালত। আদালত আরও বলছেন, বিদ্রোহের পেছনে ভেতরের ও বাইরের ষড়যন্ত্র থাকতে পারে।

পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের পর্যবেক্ষণ পড়া শেষ হয়েছে। দুপুর আড়াইটার পর সাজা ঘোষণা করা হবে।

আজ সোমবার সকাল ১০টা ৫৩ মিনিটে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার রায় পড়া শুরু করেন। সেখানে তিনি এই পর্যবেক্ষণের কথা বলেন।

এদিন পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ইতিহাসের নৃশংস ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধের পর এত বিপুলসংখ্যক নৃশংসতা নজিরবিহীন। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টে একটি শৃঙ্খলিত বাহিনীকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।

হাইকোর্ট বলেন, বিডিআরে কোনো সেনা অফিসার থাকবে না, সব ক্ষমতা তাদের থাকবে। এটিই ছিল হত্যাকাণ্ডের মূল লক্ষ্য।

এ ঘটনায় দেশের বাইরের শক্তির সম্পৃক্ততার বিষয়ে আদালত বলেন, সব সাক্ষ্যপ্রমাণ দ্বারা প্রতীয়মাণ হয় যে, এটি ভেতর ও বাইরের গভীর ষড়যন্ত্র, যা দেশের রাজনীতি ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টায় হয়েছিল।

আদালত বলেন, তৎকালীন বিডিআরের নিজস্ব গোয়েন্দারা কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে তা আগে জানতে পারেনি সেই ব্যর্থতা খুঁজতে একটি তদন্ত কমিটি করা দরকার।

আদালত আরও বলেন, কোনো সমস্যা আসলে তা তাৎক্ষণিক সমাধান করতে হবে। বিজিবির জোয়ানরা কোনো সমস্যা নিয়ে আসলে তা মীমাংসা করতে হবে এবং বিজিবিতে সেনা কর্মকর্তা ও জোয়ানদের মধ্যে পেশাদারি সম্পর্ক থাকতে হবে।

আসামিসংখ্যার দিক থেকে এই মামলা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মামলা। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ওই হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এই হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত রায় দিয়েছিলেন। আজ হাইকোর্টের রায়ের মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচারপ্রক্রিয়ার দুটি ধাপ শেষ হতে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *