ঘাম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, চার্জ হবে মোবাইলও!

সম্প্রতি মার্কিন রসায়নবিদ ও গবেষকরা এক ধরনের ‘ট্যাটুর স্টিক’ তৈরি করেছেন যা দিয়ে শারীরিক পরিশ্রম বা ট্রেনিং-এর মাত্রা পরিমাপ করা যায়। শুধু তাই নয়, তার পাশাপাশি তৈরি করা যায় বিদ্যুৎও। তাও আবার কিনা ঘাম থেকে। বিশ্বাস না হলেও এটাই সত্যি।

ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, সান ডিয়েগোর একদল গবেষক এই মজার আইডিয়াটা বাস্তবায়িত করেন। তাঁরা এর নাম দিয়েছেন ‘ট্যাটু বায়োব্যাটারি’, ‘‘ঘামের মতো শরীর থেকে নির্গত তরল পদার্থ দ্বারা যে শক্তি উৎপাদন করা যায় তার একটা দৃষ্টান্ত এটা।”

ঘামের ল্যাকটেট মাপা হয় একটি সেন্সর দিয়ে৷ল্যাকটেট হল এক প্রকার অণু, যা গ্লুকোজ থেকে মেটাবলিজমের মাধ্যমে প্রস্তুত হয়। শারীরিক পরিশ্রমের সময় কোষে ল্যাকটেট-এর ঘনত্ব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ট্রেনিং-এর সময় শারীরিক অবস্থা কেমন হয় সেটা মাপা যায় ল্যাকটেট-এর পরিমাণ দেখে, জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, সান ডিয়েগোর ডক্টরেটের গবেষক ভেনঝাউ জিয়া। অতিরিক্ত ল্যাকটেট তৈরি হলে দেহে চাপ পড়ে।

এতদিন চিকিতৎসকরা খেলোয়াড়দের দেহে ল্যাকটেট-এর পরিমাণ মাপার জন্য রক্ত পরীক্ষা করতেন। এখন তো বেশ সহজ পদ্ধতি বের হলো। ত্বকের ওপর ঘামেও থাকে ল্যাকটেট-এর অণু। একটি নতুন সেন্সর দিয়ে এটি মাপা যায়।

এই সেন্সর ডাইবেটিস রোগীদের রক্তের শর্করা মাপার মতো কাজ করে। এটি ‘এনজাইম’ বা এক ধরনের প্রোটিন, যা ল্যাকটেটকে পাইরুভিক বা পিরুভিক অ্যাসিড-এ রূপান্তর করে। এর ফলে দুটি ইলেকট্রন উন্মুক্ত হয়৷ ইলেকট্রন অর্থ চার্জ, যা থেকে বৈদ্যুতিক শক্তি উত্পন্ন হয়।

ঘামে যত বেশি ল্যাকটেট থাকে, তত বেশি বৈদ্যুতিক শক্তি উত্পন্ন হয়৷ একটি যন্ত্রের সাহায্যে এই বিদ্যুৎ মাপা যায়। তা থেকে ঘামে ল্যাকটেট-এর ঘনত্বও বোঝা যায়। পাতলা সেন্সরটি স্টিকারে ঢুকিয়ে ত্বকের ওপরে লাগিয়ে দেওয়া যায়। ল্যাকটেট থেকে পাওয়া বিদ্যুৎ দিয়ে ছোট ছোট ইলেকট্রনিক যন্ত্রও চালানো যায়। যেমন হার্টরেট মনিটর, স্মার্ট ফোন ইত্যাদি।

Leave a Reply

%d bloggers like this: