প্রতিবেদন

চট্টগ্রামে ৭৭৪ একরের ওপর চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে

চীনের জন্য ৭৭৪ একরের নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ সাত প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৫ হাজার ৩৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ২ হাজার ৯১৬ কোটি ৬০ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২ হাজার ১২৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি। একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব দেশে বাংলাদেশের নিজস্ব দূতাবাস ভবন নেই সেখানে ভবন তৈরির জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তা ছাড়া চীনের জন্য নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চীনকে শুধু জমির ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। গ্যাস তারা আমদানি করবে। সেই সাথে অন্যান্য অবকাঠামোও তারাই তৈরি করে নেবে।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, নতুন এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি তৈরি হলে চীনা কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি, বহুমাত্রিক পণ্য উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। জমি অধিগ্রহণের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২০ কোটি ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। ২০১৬ সালের জুনের মধ্যেই ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ করবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল               কর্তৃপক্ষ (বেজা)।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ৬ থেকে ১১ জুন চীন সফরকালে চীনের প্রধানমন্ত্রী সে দেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য চট্টগ্রামে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চল স্থাপনের প্রস্তাব করেন। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ভূমি সরবরাহের জন্য ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী সম্মতি প্রদান করেছেন। ২০১৪ সালের ৯ জুন বেজা ও চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চল স্থাপনের লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সমঝোতা স্মারক মোতাবেক বাংলাদেশ সরকার দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্তের ভিত্তিতে ভূমি প্রদান করবে এবং চীন সরকার মনোনীত প্রতিষ্ঠান ওই ভূমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলবে। এ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলাকে নির্বাচন করা হয়েছে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের গভর্নিং বোর্ডের দ্বিতীয় সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, জাপানীজ বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত অর্থনৈতিক অঞ্চল ও চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্প জোনের জমি অধিগ্রহণের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) মাধ্যমে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে অর্থায়ন করতে হবে। এজন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ৭৭৪ দশমিক ২৫০ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ৭০০ বর্গফুটের সিকিউরিটি শেড নির্মাণ, ৬টি সেন্ট্রি/গার্ড পোস্ট নির্মাণ এবং ১০০টি বাউন্ডারি পিলার নির্মাণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *