জাতির পিতার স্বপ্ন ও আজকের বাংলাদেশ
১৯৭৫ থেকে ২০১৯- দীর্ঘ ৪৩ বছর পেরিয়ে আবারও এসেছে আগস্ট। পঁচাত্তরের এই আগস্টেই বাংলাদেশের রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। হত্যাকারীরা শুধু জাতির পিতাকেই হত্যা করেনি, ওরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে বিলীন করে দিতে চেয়েছিল। ওরা গোটা দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করতে চেয়েছিল। জাতির পিতার প্রয়াণের পর পেরিয়ে গেছে ৪৩ বছর। আজ কোথায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ? ষড়যন্ত্রকারীদের নীলনকশা কি বাস্তবায়িত হয়েছে? নাকি জাতির পিতার স্বপ্নেরই জয় হয়েছে?
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু আমৃত্যু মানুষের কথা ভেবেছেন। মানুষের কল্যাণের কথা ভেবেছেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বের নিপীড়িত মানুষের জন্য জাতির পিতা ছিলেন সমব্যাথী।
তিনি বলেছিলেন, ‘আফ্রিকা হোক, ল্যাটিন আমেরিকা হোক, আরব দেশ হোক যেখানে মানুষ শোসিত, যেখানে মানুষ অত্যাচারিত, যেখানে মানুষ দুঃখী, যেখানে মানুষ সাম্রাজ্যবাদীর দ্বারা নির্যাতিত, আমরা বাংলার মানুষ সেই দুঃখী মানুষের সাথে আছি এবং থাকবো।’
জাতির পিতা সমৃদ্ধ বাংলদেশের সঙ্গে সঙ্গে একটা মানবিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন। তিনি চাইতেন বাংলাদেশ যেন কোনো অবস্থাতেই স্বার্থপরের মতো আচরণ না করে। এদেশ যেন নিপীড়িত মানুষের পাশে দাড়ায়।
আজকের বাংলাদেশ পুরো বিশ্বেই মানবিকতার ক্ষেত্রে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর বর্বরতায় যখন বিপম্ন লাখ লাখ রোহিঙ্গা, তখন আশ্রয়দাতা হিসেবে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বের সম্পদশালী দেশগুলো যখন শরনার্থী হঠাতে তৎপর, তখন সীমিত সম্পদ নিয়েও ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি আমরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই সংসদে ঘোষণা দিয়েছেন, এ দেশের ১৬ কোটি মানুষের মুখে খাবার জুটলে কয়েক লাখ রোহিঙ্গার মুখেও খাবার তুলে দিতে পারবো আমরা।
রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ের প্রশ্নেও বাংলাদেশ সরব। নিপীড়িত এই জনগোষ্ঠীকে তাদের ভূখণ্ড ফিরিয়ে দিতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে এদেশের সরকার। সুতরাং এটা নিঃসন্দেহেই বলা যায় যে, জাতির পিতার স্বপ্নকে মিথ্যা হতে দেয়নি বাংলাদেশ। আত্মনির্ভরশীল, আত্মমর্যাদাশীল এবং মানবিক একটা জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাঙালি জাতি।