দুর্নীতিতে জিয়া পরিবার বিশ্বে তৃতীয় : ফক্স নিউজ
বিশ্বের শীর্ষ দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক পরিবারের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে জিয়া পরিবার। তালিকার শীর্ষস্থানে আছে সদ্য প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত হওয়া পাকিস্তান মুসলিম লীগের সভাপতি নওয়াজ শরিফের পরিবার। ফক্স নিউজ পয়েন্ট এবং র্যাংকার ওয়ার্ল্ড ওয়াইড এই তথ্য জানিয়েছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিশ্বে সেরা দুর্নীতিবাজ ১০ রাজনৈতিক পরিবারের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
র্যাংকার-এর হিসাব অনুযায়ী নওয়াজ শরিফ পরিবারে অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ৪০০ কোটি ডলার। আর তৃতীয় স্থানে থাকা জিয়া পরিবারের অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ২৫০ কোটি ডলার, বাংলাদেশি টাকায় ২০ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ট্যাক্স হ্যাভেন দেশগুলোতে তারা এই টাকা পাচার করেছেন।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উন। জিয়া পরিবারের পরেই তালিকায় চতুর্থ স্থানে আছেন ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট পেত্রো প্রশেনকোর পরিবার। পেত্রো ২০০৪ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার পরিবারের সম্পত্তির পরিমাণ আনুমানিক ২৪০ কোটি ডলার। পঞ্চম স্থানে আছেন নাইজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট সানি অবাচা।
ফক্স নিউজ ফোর এবং র্যাংকার ওয়ার্ল্ড ওয়াইড, বিশ্বজুড়ে অফশোর র্যাংকিং-এর মাধ্যমে অবৈধ অর্থ লেনদেন বিষয়ে গবেষণা করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
বিশ্বজুড়ে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদরা কীভাবে একটি দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে, সেটা তদন্ত করতে গিয়েই প্রতিষ্ঠান দুটি এসব তথ্য সংগ্রহ করেছে।
তালিকায় তৃতীয় থাকা জিয়া পরিবারকে রিপোর্টে ‘বাংলাদেশের প্রভাবশালী নিয়ন্ত্রক পরিবার’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলা হয়েছে, এই পরিবার দীর্ঘ ১৩ বছর বাংলাদেশ শাসন করেছে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় মেয়াদে পরিবারটি লাগামহীন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। ২০০৬ সালে ক্ষমতা ত্যাগের আগে পর্যন্ত এই পরিবারের অন্তত ২০ জন সদস্য বিশ্বের অন্তত ১৫টি দেশে সম্পদ পাচার করেছে।
জিয়া পরিবারের শীর্ষ দুর্নীতিবাজ হিসেবে ফক্স নিউজ পয়েন্ট তারেক জিয়াকে উল্লেখ করেছেন। তবে, বেগম খালেদা জিয়া, শামীম ইস্কান্দার, আরাফাত রহমান কোকো (প্রয়াত), সাঈদ ইস্কান্দার (প্রয়াত)-এর নামে বিদেশে প্রচুর অবৈধ অর্থ এবং সম্পদ আছে বলে ফক্স নিউজ পয়েন্ট তথ্য প্রমাণ পেয়েছে। যে ১৫টি দেশে জিয়া পরিবারের অবৈধ সম্পদ রয়েছে যেগুলো হলোÑ সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, সৌদি আরব, কুয়েত, বারমুডা, কেম্যান আইসল্যান্ড, বাহামা এবং ব্রুনাই। অধিকাংশ অর্থই বেনামে বিভিন্ন অফশোর ব্যাংকে গচ্ছিত। কিছু কিছু অর্থ বিনিয়োগও করা আছে।
গত দুবছর ধরে এসব অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য বিশ্বব্যাপী দাবি উঠলেও এখন পর্যন্ত আইনি সীমাবদ্ধতার জন্য কিছুই করা সম্ভব হয়নি।
ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে তারেক রহমান : এফবিআই
তারেক জিয়া সম্পর্কে যুক্তরাজ্যকে সতর্ক করল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। যুক্তরাজ্যের কাছে পাঠানো এক গোপন বার্তায় তারেক জিয়াকে উগ্রবাদী জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষক এবং মদদদাতা হিসেবে চিহ্নিত করে তাকে সর্বোচ্চ নজরদারিতে রাখার পরামর্শ দিয়েছে। এফবিআই বলেছে, ‘এই ব্যক্তিটি যুক্তরাজ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।’
বিভিন্ন দেশের সন্দেহভাজন, উদ্বেগজনক এবং ভয়ঙ্কর ব্যক্তিদের সম্পর্কে এফবিআই আগাম সতর্কবার্তা দিয়ে থাকে। এর আগে দাউদ ইব্রাহিম, পারভেজ মোশাররফসহ অনেক বিষয়েই এফবিআই সতর্কবার্তা দিয়েছিল। বাংলাদেশ সরকারকেও ২০০৩ সালে শায়খ আবদুর রহমান, বাংলাভাই সম্পর্কে এফবিআই সতর্কবার্তা দিয়েছিল।
এফবিআই তার সতর্কবার্তায় তারেক জিয়াকে ‘পলিটিক্যাল টেররিস্ট’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছে ‘রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য এই ব্যক্তি বল প্রয়োগেই বিশ্বাস করে।’ এফবিআই পূর্বাভাস দিয়েছে, ‘তারেক জিয়া আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাংলাদেশে বড় ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটানোর জন্য পরিকল্পনা করেছে।’ এই পরিকল্পনার কিছু নমুনা এফবিআই যুক্তরাজ্যকে দিয়েছে।
এফবিআই তার গোপন বার্তায় বলেছে, ‘বিএনপির নেতৃবৃন্দকেও রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে তাকে বাদ দেওয়ার জন্য বারংবার অনুরোধ করার পরও তারা অনুরোধ শোনেনি। ২০০৭ সালে আর রাজনীতি করবেন না, এই মুচলেকা দিয়েই তিনি দেশত্যাগের অনুমতি পান। কিন্তু কার্যত তিনিই এখন বিএনপির মূল নেতা। বিএনপি তাকে বাদ দিয়ে কোনো রাজনৈতিক পরিকল্পনার কথা চিন্তাও করতে পারে না। সমস্যা হলো, তার চিন্তাগুলো রাজনীতি মনস্ক নয়; বরং সন্ত্রাস মনস্ক।’
এফবিআই রিপোর্টে বলেছে, ‘একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা চিন্তা কখনও সুস্থ রাজনৈতিক চিন্তা হতে পারে না। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে তারেক জিয়া, এরকম একটি ঘৃণ্য পরিকল্পনায় তার সব রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক শক্তি ব্যয় করছে।’
এফবিআই মনে করছে, ‘লন্ডন থেকে তারেক জিয়া এমন কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং মদদ দিচ্ছে, যারা সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক। অবিলম্বে এই তৎপরতা বন্ধ না হলে সন্ত্রাসবাদই লাভবান হবে।’
এফবিআই জানিয়েছে, ‘বাংলাদেশে বড় ধরনের কিছু সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটানোর জন্য ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা নিয়ে তারেক এগুচ্ছে। যেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে, এ অঞ্চলে সন্তাসবাদের ঝুঁকি বাড়বে। এজন্য এখনই এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের মনোযোগী হওয়া উচিত।’ উল্লেখ্য, ২০১০ সাল থেকে তারেক জিয়া এফবিআই’র বিপজ্জনক ব্যক্তিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। লাল তালিকাভুক্ত এ ধরনের ব্যক্তিরা বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুক না কেন, এফবিআই’র নজরদারিতে থাকে।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রেস
কোকোকে হত্যা করেছে তারেক
মালয়েশিয়ার আদালতে মামলা
‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন নি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার বড় ভাই তারেক জিয়ার নির্দেশে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত কয়েকজন বাঙালি তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।’
এরকম একটি চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করে মালয়েশিয়ার একটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন জনৈক আবদুল হামিদ ওমর। তিনি মালয়েশিয়ার নাগরিক। নিজেকে তিনি কোকোর ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে দাবি করেছেন।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নথিভুক্ত হয়েছে। মামলার দরখাস্তে কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, মালয়েশিয়ায় কোকোর দুজন বন্ধু আবদুল্লাহ নাভিদ এবং শিফাত হোসাইনকে সাক্ষী করা হয়েছে। মামলার আরজিতে দাবি করা হয়েছে, কোকোর সম্পত্তি আত্মসাৎ করার উদ্দেশেই তারেক এই হত্যাকা- সংঘটিত করেছেন।
বেগম জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি কুয়ালালামপুরে মারা যান। বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করলে তাকে ইউনিভার্সিটি মালায়া মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার মৃতদেহ ঢাকায় নিয়ে আসা হয় এবং বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
প্রায় দুই বছর ১০ মাস পর অভিযোগ উঠেছে এটা স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, হত্যাকা-। মামলার বাদী আবদুল হামিদ ওমর একজন মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ী। তিনি আরজিতে অভিযোগ করেন যে, আরাফাত রহমান কোকো ২৭৫ কোটি রিঙ্গিত সম্পদের মালিক। অধিকাংশ সম্পদেরই নমিনি ছিল তার বড় ভাই তারেক জিয়া। কোকোর মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে আমার অফিসে বসেই কোকোর সাথে তার বড় ভাইয়ের টেলিফোনে কথা কাটাকাটি হয়। কোকোকে তারেক বেশ কিছু টাকা বাংলাদেশের বিভিন্ন ঠিকানায় পাঠাতে বলে। কিন্তু এত টাকা এ মুহূর্তে পাঠানো সম্ভব নয় বলে টেলিফোনে জানান তিনি। অভিযোগে বলা হয়েছে, এই ঝগড়ার পর কোকো তার যাবতীয় সম্পত্তির নমিনি তার স্ত্রী শর্মিলা রহমানের নামে করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ ব্যাপারে একজন ভালো আইনজীবী দেখার জন্যও কোকো আমাকে অনুরোধ করে।
ওমরের অভিযোগ, এই ঝগড়ার দুদিন পর আরাফাত রহমান কোকোর বাসায় পাঁচজন বাঙালি যায়। কোকোর স্ত্রী শর্মিলা আহমেদের সামনেই তারা বাংলাদেশে আন্দোলনের জন্য টাকা প্রয়োজন বলে জানায়। তারা বলে ‘ভাইয়া’ তাদের পাঠিয়েছে। তারা এও হুমকি দেয় যে টাকা না দিলে পরিণতি ভয়াবহ হবে। ওমর তার আরজিতে বলেছেন, এই বাঙালিরা স্থানীয় বিএনপির নেতা বলে কোকোর স্ত্রী শর্মিলা আমাকে জানায়। আমি পুলিশে খবর দিতে চাইলেও শর্মিলা আমাকে বারণ করে।
ওমর অভিযোগে বলেছেন, কোকোর মৃত্যুর খবর শুনেই আমি হাসপাতালে যাই। সেখানে আমি বেশ কিছু বাঙালি দেখি। কান্নারত শর্মিলা আমাকে বলে ওরাই কোকোর মৃত্যুর জন্য দায়ী। কিন্তু শাশুড়ি এবং পরিবারের নির্দেশে শর্মিলা তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য কারও বিষয়ে কোনো অভিযোগ উত্থাপন করেন নি।
অভিযোগে ওমর আরও বলেছেন, কোকোর মৃত্যুর ৩০ দিনের মধ্যে তারেক অ্যাটর্নির মাধ্যমে কোকোর সব টাকা-পয়সা সরিয়ে নিয়েছে। কোকোর স্ত্রীও এখন লন্ডন প্রবাসী বিধায় আমি এই মামলা করলাম।
সূত্র : বাংলা ইনসাইডার