দেশে মানুষের গড় আয়ু ৭০ বছর ৪ মাস
দেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে ধারাবাহিকভাবেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে, এদেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ বছর ৪ মাস। ২০০৯ সালে যা ছিল ৬৭ বছর ২ মাস। একই সাথে দেশের গুরুত্বপূর্ণ আর্থ-সামাজিক সূচকেও বাংলাদেশ এগিয়েছে অনেক। বিবিএস পরিচালিত বাংলাদেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যানের তদারকি (এমএসভিএসবি) শীর্ষক জরিপ-২০১৩-এর ফলাফলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। গত ১৪ জুলাই সংস্থাটি আনুষ্ঠানিকভাবে জরিপের এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক দশকের মধ্যে দেশে দারিদ্র্য কমেছে রেকর্ড পরিমাণ। কয়েক বছরে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতেও ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। সরকারের ব্যাপক টিকাদান কর্মসূচিসহ নানা ধরনের জনমুখী স্বাস্থ্যসেবার উদ্যোগে মহামারীর প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। একই সাথে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এসব কারণে আর্থ-সামাজিক সূচকে পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে রয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক উন্নতির প্রভাব পড়েছে গড় আয়ু ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সূচকে। সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ।
বিবিএসের তথ্যমতে, কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে দেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। এক্ষেত্রে প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ এগিয়ে। পাঁচ বছর আগে ২০০৯ সালে গড় আয়ু ছিল ৬৭ বছর ২ মাস। সেটি ২০১০ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭ বছর ৭ মাস। এর পরের বছর দাঁড়ায় ৬৯ বছর। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ বছর ৪ মাস। তবে পুরুষের চেয়ে নারীর গড় আয়ু বেশি। পুরুষের গড়ে ৬৮ বছর ৮ মাস, নারীর ৭১ বছর ২ মাস।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূর উন নবী মনে করেন, গড় আয়ু বৃদ্ধির মূল কারণ দারিদ্র্য বিমোচনে সার্বিক সাফল্য অর্জন। তিনি জানান, দারিদ্র্য কমলে মৃত্যুহারও কমবে। ফলে মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যায়। পাশাপাশি দেশে শিক্ষার হার ও নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে। নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া সরকারের নেওয়া বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিও এক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে বলে তিনি মনে করেন।