পল্লী জনপদ : এক টুকরো শহরে বহুতল ফ্ল্যাট
মোটেও স্বপ্ন নয়। নিভৃত গ্রামের মানুষ থাকবে শহরের মতোই বহুতল ফ্ল্যাট বাড়িতে। যেখানে থাকবে গ্যাস ও বিদ্যুৎ। ফ্ল্যাট কিনতে বেশি অর্থেরও দরকার নেই। সাধ্যের মধ্যে খুব কম ডাউন পেমেন্টে ঘরে ওঠা যাবে। তারপর কিস্তির অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেবে ফ্ল্যাট বরাদ্দের সরকারি কর্তৃপক্ষ। এ পর্যন্ত পাঠ করে কেউ অবাস্তব মনে করতে পারেন। তবে এটাই এখন বাস্তব। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে সাত বিভাগের একটি করে গ্রামে। আগামী বছরেই ফ্ল্যাট নির্মিত হয়ে প্রতিটি চারতলা ভবনে ২৭২টি করে পরিবার আশ্রয় পাবে। পর্যায়ক্রমে তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে। বহুতল ভবনে চার ধরনের ফ্ল্যাট থাকবে। প্রতিটি ফ্ল্যাটেই বেডরুম, ড্রইংরুম, রান্নাঘর খাওয়ার স্পেস ও অ্যাটাচ্ড বাথরুম সুবিধা আছে। প্রথমে কাজ শুরু হয়েছে ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর উপজেলার জলিরপাড়া গ্রামে। সেখানে ৩ দশমিক ৭৫ একর খাস ভূমির ওপর নির্মিত হচ্ছে এমন ফ্ল্যাট ভবন। এভাবে সিলেট বিভাগের দক্ষিণ সুরমা, খুলনা বিভাগের রূপসা বাটিয়াঘাটা, রংপুর সদরের নিয়ামতপুর, বগুড়ায় শাজাহানপুর উপজেলার জামালপুরে। প্রতিটি স্থানে জমি কেনা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে শিগগিরই জমি কেনা হবে। প্রতিটি গ্রামে একই পরিমাণ জমিতে ভবন নির্মিত হবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (আরডিএ) মাধ্যমে। অধিক জনসংখ্যার চাপে পরিবারের সংখ্যা বেড়ে গিয়ে বসতবাড়ি নির্মাণে দিনে দিনে দেশের আবাদি জমি কমে যাওয়া ঠেকানো রোধে বগুড়া আরডিএ’র গবেষণায় উদ্ভাবিত এই পরিকল্পনাটি এসেছে। গ্রামের মানুষকে রোজগারের ব্যবস্থা করে দিয়ে স্বল্প খরচে বহুতল ভবনে আবাসনের ব্যবস্থাটি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিতে আনার পর একনেক বৈঠকে উপস্থাপিত হলে গত বছর তা পাস হয়ে বরাদ্দ মেলে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এই প্রকল্পটির নাম দেন ‘পল্লী জনপদ’। এমনটি জানিয়ে বগুড়া আরডিএ’র মহাপরিচালক এমএ মতিন ও প্রকল্পের পরিচালক মাহমুদ হোসেন খান জানালেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ব্রিটেন সফরকালে সেখানে এমন ব্যবস্থা দেখে বাংলাদেশে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।