প্রবাসীদের খাদ্য সহায়তায় আরও ৩ কোটি টাকা বরাদ্দঃ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জরুরি খাদ্য সহায়তার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন দূতাবাসে আরও তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে করোনা ভাইরাসের এই পরিস্থিতিতে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য করণীয় বিষয়ে চতুর্থ জরুরি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এসময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহফুজুর রহমান।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, বিদেশফেরত প্রবাসীদের জন্য কোয়ারেন্টিন ক্যাপাসিটি আরও বাড়াতে হবে। যেসব প্রবাসী বাংলাদেশি হেলথ সার্টিফিকেট নিয়ে দেশে আসছেন, তাদেরও নিয়মিত মনিটরিংয়ের আওতায় রাখতে হবে।
ইমরান আহমদ বলেন, করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীদের ফেরত আনার অনুরোধ আসছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক অথবা বহুপাক্ষিক আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশেষ করে, কলম্বো প্রসেস ও আবুধাবি ডায়ালগ ফোরামের সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে শিগগির একটি বৈঠক করা হবে।
তিনি বলেন, সভায় বিদেশফেরত প্রবাসীরা যেন দেশে চলমান ত্রাণ সহায়তা পান, সে বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে একটি নির্দেশনা জারি করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সামগ্রিক সুরক্ষায় সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন দূতাবাসে আরও তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশে অবস্থানরত বিত্তবান ও সামর্থ্যবান বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বিপদগ্রস্ত প্রবাসীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হচ্ছে। একইসঙ্গে দেশে-বিদেশে করোনায় আক্রান্তদের প্রতি সমবেদনা এবং দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন মন্ত্রী।
সভায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বিদেশেফেরতদের জন্য সুষ্ঠুভাবে কোয়ারেন্টিন আয়োজন করায় সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি মন্ত্রী বিদেশ প্রত্যাগতদের জন্য প্রয়োজনীয় ফিল্ড হসপিটাল করার জন্য সেনাবাহিনীকে আহবান জানান। এছাড়াও সেনাবাহিনী যদি দেশের চলমান খাদ্যশস্য ব্যবস্থাপনায় কৃষককে পরিবহন সুবিধা দেয়, তাহলে কৃষকও ফসলের ন্যায্যমূল্য পাবে এবং দেশেও খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত থাকবে বলে মনে করেন মন্ত্রী।
সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত সভায় যেসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল, সেগুলোর বাস্তবায়নের হার অত্যন্ত সন্তোষজনক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং দপ্তরগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এসব কার্যক্রম সম্পাদন করে আসছে।
সভায় প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার মাহফুজুর রহমান বলেন, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ২০ হাজার বিদেশফেরত প্রবাসীর কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে। এছাড়া তিনি করোনা পরিস্থিতিতে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিভিল প্রশাসনকে সব সময় সহায়তার আশ্বাস দেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, পরারাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সুরক্ষাসেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্সাল মো. মফিদুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আকরাম হোসেন, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শামছুল আলম, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন এবং ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান প্রমুখ।