বঙ্গবন্ধুর ভাবনায় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি
১৯৭২ সালে ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রশ্ন করেছিলেন “আপনার শক্তি কোথায়?” বঙ্গবন্ধুর সহজ সরল ভাষায় উত্তর ছিল “আমি আমার জনগণকে ভালোবাসি।” যখন বিপরীতভাবে জিজ্ঞেস করা হলো “আপনার দুর্বল দিকটা কি?” বঙ্গবন্ধুর আবার সাধাসিধে উত্তর “আমি আমার জনগণকে খুব বেশি ভালোবাসি।” ডেভিড ফ্রস্ট আরেকটি প্রশ্ন ছিল “আপনি যখন দেখলেন, ওরা কবর খনন করেছে, তখন আপনার মনে কার কথা আগে জাগল? আপনার দেশের কথা? না, আপনার স্ত্রী-পুত্র পরিজনের কথা?” বঙ্গবন্ধু বললেন “আমার প্রথম চিন্তা আমার দেশের জন্য। আমার আত্মীয়-স্বজনদের চাইতেও আমার ভালোবাসা আমার দেশের জন্য। আমার যা কিছু দুঃখ ভোগ, সে তো আমার দেশেরই জন্য। আপনি তো দেখেছেন, আমাকে তারা কী গভীরভাবে ভালোবাসে।”
এইই হলো বঙ্গবন্ধু। যিনি মানবিক জীবনবোধকে লালন করতেন। মানুষের মনের ভিতরে প্রবেশ করে তাদের প্রণোদনার মাধ্যমে গড়ে তুলতে চেয়েছেন এক যুদ্ধ বিধস্ত দেশের অর্থনীতি। মানবিক অর্থনীতির এই ধারণা যা বঙ্গবন্ধু আগেই অনুধাবন করতে পেরেছেন তা আজকের গবেষণায় সফল প্রমাণিত হয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু প্রথমে মুক্তিযুদ্ধের ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান, মাত্রা ও প্রকৃতি নির্ধারণ করেন। যার মূলভিত্তি ছিল সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও প্রশাসনিক উন্নয়নের মাধ্যমে মাটি ও মানুষের সমন্বিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
অনেকেই উন্নয়নের এই নতুন দর্শনকে “স্বদেশের মাটি উত্থিত উন্নয়ন দর্শন” হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্তভিত্তিক গবেষণা ও যৌক্তিকতা থেকে দেখা গেছে, যদি বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩-২০১১ সাল পর্যন্ত বেঁচে থাকতেন তবে এদেশের অর্থনীতিতে মোট দেশজ উৎপাদনের বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধির হার ৯ শতাংশের মত হতো। “বঙ্গবন্ধু-সমতা-সা¤্রাজ্যবাদ গ্রন্থে এর যৌক্তিক সিদ্ধান্তে উপনীত হবার বিষয়টি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এখানে যে ধারণা করা হয়েছে, ২০১১ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে তিনি সাতটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা সম্পূর্ণ করে অষ্টম পঞ্চমবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রথম তিন বছর পর্যন্ত সময় পেতেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, অর্থনীতিকে গড়ে তোলার দীর্ঘ মেয়াদী ভিশনের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু পাঁচ বছর মেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এই উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলি অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিভিন্ন উপদানকে বিবেচনা করে করা হয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থনীতির কর্মকৌশল বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না সেটিও বিচার বিশ্লেষণ করে দেখার কর্মপদ্ধতি নির্ধারিত হয়েছিল। ধারণা করা হয় যদি প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৭৩-১৯৭৮) বাস্তবায়ন হতো তবে প্রবৃদ্ধির হার ৫.৫ শতাংশে পৌছাতো। এই পরিকল্পনার মূল বিষয়গুলো ছিল অবকাঠামো পুনর্বাসন ও নির্মাণ (বন্দর, রাস্তাঘাট, কলকারখানা, সেতু, কালভার্ট, স্কুল-কলেজ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ), শিক্ষা, জনসংখ্যানীতি, দারিদ্র্য দূরীকরণ, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং আয় ও সুযোগ বৈষম্য হ্রাসকরণ।
মূলত এই পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভঙ্গুর একটি অর্থনীতিকে কিভাবে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী দৃঢ় ভিত্তির উপর দাড় করানো যায় এই ছিল প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্য। এজন্য তিনি বিভিন্ন ভাবনাকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কৃষি ভাবনা, ক্ষুদ্র ও গ্রামীণ কুটিরশিল্পের সম্প্রসারণ, দূর্ণীতি দমন, দেশজ প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদের ব্যবহার, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, কারিগরি শিক্ষার বিস্তার, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ, গণমূখী সমবায় আন্দোলন, সম্পদের সূষম বণ্টন ইত্যাদি। এই বিপুল অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভাবনা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চুড়ান্ত দর্শনের মূলভিত্তি ছিল বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়ে তোলা ও শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত বাঙালীর সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।
এই প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার বাস্তবায়নের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাগুলোর বিভিন্ন সম্ভাবনা ও যৌক্তিকতা বিবেচনা করা যেতে পারে। যার ফলসূতিতে দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৭৮-১৯৮৩), তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৮৩-১৯৮৮), চতুর্থ পঞ্চাবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৮৮-১৯৯৩), পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৯৩-১৯৯৮), ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৯৮-২০০৩), সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (২০০৩-২০০৮), অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (২০০৮-২০১৩) এর প্রবৃদ্ধির হার হতো যথাক্রমে ৭.৫%, ৮.৫%, ৯.৫%, ১০.৫%, ১১% ও ১১% এর বেশি। কিন্তু বাস্তবে এটি ঘটেনি। তার প্রধান কারণ হলো ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট নৃশংসভাবে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে হত্যা করে পৃথিবীর জঘন্যতম ইতিহাস সৃষ্টি করা। এতে করে যে দর্শন ও পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল তা ব্যাহত হয়। যা পরবর্তিতে রাষ্ট্র বিরোধী অপশক্তির কারণে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশের সংবিধানে জনগণকে প্রজাতন্ত্রের মালিক হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তার বৈষম্যহীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কাঠামোতে যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন তা হলো জনগণের উন্নয়নের মাধ্যমে জনকল্যাণ নিশ্চিত করা। এই ধারণা আজকের দিনে অমর্ত্য সেন ও মার্কিন অর্থনীতিবিদ রিচার্ড এইচ থ্যালারের মানবিক উন্নয়নের সাথে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বঙ্গবন্ধু যে ধারণাটি পোষণ করতেন তা হলো, মানুষ যদি হতদরিদ্র থাকে তবে দেশও হতদরিদ্র থাকবে। কাজেই মানুষের আর্থসামজিক অবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে যখন মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা যাবে তখন দেশও সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠবে। বঙ্গবন্ধু তাঁর অর্থনীতির ধারণায় সম্পদের সুষম বণ্টন ও সম্পদ সৃষ্টির বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এ দুটি উপাদানই মানবিক উন্নয়নের সাথে কোন না কোন ভাবে যুক্ত।
সংবিধানের চার মূলনীতির মাধ্যে অন্যতম একটি ছিল সমাজতন্ত্র। তবে বঙ্গবন্ধু এই সমাজতন্ত্রকে সোভিয়েত ইউনিয়নের লেলিনের সমাজতন্ত্র বা গণচীনের মাওসেতুং এর সমাজতন্ত্র বলে মনে করতেন না। তিনি যেটি বলতেন, এই সমাজতন্ত্র হলো বাংলাদেশের সমাজতন্ত্র। যার মূলভিত্তি ছিল মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা। এখানে সম্পদের সুষম বন্টনের কথা বলা হয়েছে। এর অর্থ এই নয় যে, দেশের সকল মানুষের সম্পদ সমপরিমাণ থাকবে। বরং এটি হচ্ছে প্রতিটি মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হয়ে তার খেয়ে পড়ে বাঁচার অধিকার নিশ্চিত করবে। এই অধিকারের প্রধান একটি বিষয় ছিল জনগণের আয় যাতে সামষ্টিক অর্থনীতিক প্রবৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি রাখা যায়। এটি নিশ্চিত করার জন্য যারা বিত্তশালী বা অধিক সম্পদের মালিক হবেন তাদের উপর যৌক্তিক ভিত্তিতে অধিক কর আরোপ করা। আবার এই কর-এর টাকার মাধ্যমে কম বিত্তশালী বা দরিদ্র মানুষের জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার রাষ্ট্রিয় খাত থেকে।
অন্যদিকে দেশীয় উদ্যোক্তাদের প্রনোদনার মাধ্যমে শিল্পের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে কার্যকর ভূমিকা রাখাও ছিল বঙ্গবন্ধুর অর্থনীতির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। এর মূল লক্ষ্য ছিল যদি উদ্যোক্তা তৈরী করা যায় তবে দেশ যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে তেমনি কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের উর্বর ভূমিকে বিবেচনায় রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান উপাদান হিসেবে কৃষিকে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি যেমন শিক্ষাকে বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করেছেন তেমনি রাষ্ট্রের উন্নয়নের কৃষি ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য কৃষকের ফসল ফলানোর অধিকার নিশ্চিত করাকেও বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করেছেন।
আপাত দৃষ্টিতে অর্থকে বিনিয়োগ বলে মনে করা হলেও শিক্ষা, কৃষক, জনকল্যাণ ও শিল্পও যে বিনিয়োগ হতে পারে বাঙালীর মাধ্যে বঙ্গবন্ধু এই ধারণাটি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। এই কারণে বিভিন্ন কৃষি উপকরণ যেমন- বীজ, সার ও কীটনাশক অধিক মূল্যে আমদানি করে নামমাত্র মূল্যে চাষীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। কম সুদে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা ও কৃষকের পণ্যের নায্য মূল্য নিশ্চিত করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও বাস্তাবায়নের উৎকর্ষতা সাধনের জন্য তিনি কৃষি সংস্কার, অর্থনৈতিক সংস্কার, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও টেলিযোগাযোগ উন্নয়ন, সামাজিক সাংস্কৃতিক ক্ষেত্র উন্নয়ন, শিক্ষার সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর কৃষি গবেষণাকে অনুপ্রাণিত করেন, একই সাথে কৃষি গবেষণার সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কৃষি ক্ষেত্রে কৃষকদেরকে আরও বেশি করে সম্পৃক্ত ও অনুপ্রাণিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু পুরস্কার নামে কৃষকদের জন্য সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ঘোষণা করেন। শিক্ষাকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচনা করে তিনি দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারীকরণ করেন। এর ফলে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি সরকারি হয়। এছাড়া তিনি পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে বই বিতরণ এবং অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা ঘোষণা করেন। যুদ্ধ বিদ্ধস্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যে অর্থনৈতিক সংস্কারগুলো তিনি করেছিলেন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো জুট, সুগার, টেক্সটাইল, গ্যাস এন্ড অয়েল সংক্রান্ত নতুন চারটি কর্পোরেশন গঠন করা, বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা, বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন যুক্ত বলে তিনি যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ১৯৭৪ সালের মধ্যে যুদ্ধের কারণে ধ্বংসপ্রাপ্ত সকল ব্রীজ, কালভার্ট, রেল সেতু নির্মাণ করেন। যমুনা নদীর উপর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য তাঁর উদ্যোগে গঠিত কমিশন ১৯৭৪ সালের ৪ নভেম্বর যমুনা সেতুর প্রাথমিক সম্ভাব্যতা রিপোর্ট প্রণয়ন করে।
এই সময়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-যশর, ঢাকা-কুমিল্লা রুটে আভ্যন্তরীণ বিমান চালুর ব্যবস্থা করা হয়। অর্থনীতির সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত আরও কতগুলো বিষয় যেমন- সংবিধান প্রণয়ন, পুনর্বাসন পদক্ষেপ, আদমশুমারী, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুদৃঢ়করণ, পররাষ্ট্রনীতি উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। মাইকেল বার্নস ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন। ১৯৭৩ সালের ২১ ডিসেম্বর লন্ডনের বিক্ষাত পত্রিকা নিউ স্টেটসম্যানের এক প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধুর মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেছেন, “এ মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ বঙ্গবন্ধু নিজেই, শেখ মুজিবের অসামান্য গতিশীলতা ও আকর্ষণ করার ক্ষমতা এখনও বর্তমান, হয়তো তাতে সামান্য চিড় ধরতে পারে পর্বতপ্রমাণ প্রতিকূলতার জন্য, কিন্তু এখনও তিনি তাঁর মানুষদের উদ্দীপ্ত করার ও ঐক্যবদ্ধ রাখার শক্তি। সমানে যে কঠিন ও ভয়ঙ্কর দিনগুলি রয়ে গেছে, তা পাড়ি দিতে গেলে শেখ মুজিবেরর নেতৃত্বের যে শক্তি তা আরো বেশি প্রয়োজন পড়বে।”
আজ বঙ্গবন্ধু নেই। অনেক উত্থান-পতন, অপরাজনীতি ও ষড়যন্ত্রের পথপরিক্রমা শেষে বঙ্গবন্ধুর দর্শনের সরকার আজ ক্ষমতায় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি বেগবান হচ্ছে। তবে এতো কিছুর পরও বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও আদর্শকে প্রাধান্য না দিয়ে যদি অপশক্তির ফাঁদে পা দিয়ে জনগণ, নেতা ও দলের কর্মীরা লক্ষ্যচ্যুত হয়, তবে সব সাফল্যই ম্লান হয়ে যাবে। “মহা অর্জনের জন্য মহা ত্যাগ দরকার” এটি যদি সবাই চেতনায় ধারণ করতে পারে তবেই উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।
লেখক: শিক্ষাবিদ ও কলামিষ্ট/ অধ্যাপক, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর