প্রতিবেদন

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ-ফ্রান্সের সাথে চুক্তি

বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণের জন্য প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার ‘স্যাটেলাইট সিস্টেম’ কিনতে চুক্তি করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান থ্যালেস এলিনিয়া স্পেস-এর সাথে গত ১১ নভেম্বর রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয়।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ এবং থ্যালেস এলিনিয়া স্পেসের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জঁ লুক গল নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ২১ অক্টোবর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণে ‘স্যাটেলাইট সিস্টেম’ কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান থ্যালেস এলিনিয়া স্পেস ১ হাজার ৯৫১ কোটি ৭৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা চুক্তি মূল্যে ‘স্যাটেলাইট সিস্টেম’ সরবরাহের কাজ পায়।
প্রতিষ্ঠানটি ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণে প্রয়োজনীয় মূল যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবে। কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু’ উৎক্ষেপণ প্রকল্পের জন্য ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর ২১৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় রাশিয়ার কাছ থেকে ‘অরবিটাল সøট’ ইজারা নেওয়ার প্রস্তাবের অনুমোদন দেয় সরকার।
২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর এই উপগ্রহ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে সম্প্রচার ও টেলিযোগাযোগ সেবা পরিচালনার ৩ হাজার কোটি টাকার একটি বড় প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক। ২০১৭ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে আশা করছে সরকার।
বিবিসি জানায়, পৃথিবীর কক্ষপথে প্রথম একটি বাংলাদেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে সিস্টেম ক্রয়ের একটি চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। এই স্যাটেলাইটটির নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৯৫১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। তবে পুরো প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। সরকারি-বেসরকারি তহবিল ব্যবস্থাপনায় এই অর্থ জোগাড় করা হবে।
বাংলাদেশকে এখন মূলত বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির স্যাটেলাইট ট্রান্সপন্ডার ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করতে হয়। নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর বাংলাদেশ এক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় করতে পারবে, সেই সাথে দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও স্বল্প খরচে স্যাটেলাইট সুবিধা ব্যবহার করতে পারবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এটি হবে মূলত একটি সম্প্রচার এবং যোগাযোগ স্যাটেলাইট। বর্তমানে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ১১২ কোটি টাকার ওপরে প্রতিবছর খরচ করছে। এই পুরো টাকাটাই বিদেশে চলে যায়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটির মাধ্যমে এসব সেবা দেওয়া যাবে।
তিনি বলছিলেন, পুরো বাংলাদেশই এই স্যাটেলাইটের আওতার মধ্যে আসবে। ফলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া সহজ হবে। ইন্টারনেট যোগাযোগ আরও সহজ হয়ে উঠবে। ইন্দোনেশিয়া থেকে তাজিকিস্তান পর্যন্ত এই স্যাটেলাইটটির আওতা থাকবে। এর মধ্যে অনেক দেশেরই নিজস্ব স্যাটেলাইট নেই। এসব দেশ আমাদের এই স্যাটেলাইট থেকে সেবা নিতে পারবে।
এর আগে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় আমেরিকা ও রাশিয়ার দুটি প্রতিষ্ঠানের সাথে বাংলাদেশের চুক্তি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *