বর্ণিল উচ্ছ্বাসে বর্ষবরণ অমঙ্গল দূর করার শপথ
‘বর্ষবরণ বাঙালির এমন এক সর্বজনীন উৎসব যেখানে প্রতিবছরই মানুষ শপথ নেয় অমঙ্গল দূর করার। তারই প্রত্যয় চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রায়।’
উত্তরণ প্রতিবেদন: বাংলার সবুজ জমিন থেকে অশুভ, অশুচি মুছে দিয়ে মঙ্গলালোকে অমঙ্গল দূর করার প্রত্যয়ে ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ কোটি বাঙালিপ্রাণ বরণ করেছে নতুন বাংলা বছর ১৪২৩ সালকে। ভোরের আলো ফোটার মুহূর্তেই বর্ষবরণের সেই চিরায়ত সুরে জেগে ওঠে বাংলাদেশ, ‘এসো হে বৈশাখ, এসো, এসো’। রমনার বটমূলে ছায়ানটের শিল্পীরা যেমন সমস্বরে গাইছিলেন রাজধানীবাসীকে সাথে নিয়ে, বাংলার হাটে, মাঠে, ঘাটেও গেয়ে উঠেছিলেন শত, সহ¯্র মানুষ হাজারও আয়োজনে। আনন্দ, হাসি, গান, উচ্ছ্বাসে সংকীর্ণ ধর্ম, বর্ণ পরিচয় ভুলে মিলনমেলার এক মোহনায় সমবেত হয়েছিল বাঙালি হৃদয়। ভোরের পাখি, সূর্যের প্রথম রং, পদ্মা, মেঘনা, যমুনার বুকে প্রথম প্রহরে উড়ে আসা শঙ্খচিল, কৃষ্ণচূড়ার চিবুক ছুঁয়ে যাওয়া প্রভাতি হাওয়া, সবাই যেন সমবেত কণ্ঠে স্লোগান তুলেছিল, ‘আমরা সবাই বাঙালি’।
বর্ষবরণ বাঙালির এমন এক সর্বজনীন উৎসব যেখানে প্রতিবছরই মানুষ শপথ নেয় অমঙ্গল দূর করার। তারই প্রত্যয় চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রায়। সর্বনাশের সব চিহ্ন মুখোশের আবরণে তুলে ধরে চেতনায় আলোয় অকল্যাণ দূর করার প্রত্যয়ে হাজারও কণ্ঠের প্রার্থনা, ‘অন্তর মম বিকশিত করো, অন্তরতর হে’।
রাজধানীজুড়ে প্রাণের উচ্ছ্বাসের কোনো কমতি ছিল না। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুরো রাজধানী ছিল উৎসবের নগরী। রমনা বটমূল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, চারুকলা ইনস্টিটিউট, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চ, হাতিরঝিলÑ সর্বত্রই ছিল মানুষের আনাগোনা। প্রত্যেকেই মুক্ত মনে আবাহন করেছেন বাংলার নতুন বছরকে।