শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনা করে গত ২ ডিসেম্বর রাজধানীসহ সারাদেশের মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে দোয়া ও প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, দুপুর ১২টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে প্রার্থনা সভা, সকাল সাড়ে ১০টায় মেরুল বাড্ডা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায় মিরপুরের সেনপাড়ায় সকাল ৯টায় বাংলাদেশ ব্যাপ্টিস চার্চ সংঘে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ এবং সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও সর্বস্তরের জনগণ এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
বায়তুল মোকাররমে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। মোনাজাত শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, হাঙ্গেরি সফরের যাত্রার মাঝপথে মধ্য আকাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইটে যান্ত্রিক গোলযোগের পর নিরাপদে জরুরি অবতরণের ফলে মর্মান্তিক বিপর্যয় থেকে জাতি রক্ষা পেয়েছে। আমাদের নেত্রী, বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনাকে আল্লাহতায়ালা হেফাজত করেছেন। সেদিন ইতিহাসের আরেকটা মর্মান্তিক বিপর্যয় ঘটে যেতে পারত। সেদিন মহাসংকটের আরেকটি কালো ছায়া জাতির জীবনে নেমে আসতে পারত। আল্লাহর অশেষ রহমতে তা হয়নি। আল্লাহর অশেষ রহমত শেখ হাসিনাকে সেদিন হেফাজত করেছে।
‘পরিকল্পিতভাবে বিমানের বি-নাট ঢিলা করা হয়’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানে মনুষ্য সৃষ্ট ‘যান্ত্রিক ক্রুটি’র ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় বরখাস্তকৃত বাংলাদেশ বিমানের প্রকৌশলীসহ সাত কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গত ২১ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। মামলায় উল্লেখ করা সাতজন ছাড়াও অন্য দুই আসামি ২২ ডিসেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ দুই আসামি হলেনÑ বিমানের জুনিয়র টেকনিশিয়ান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও প্রকৌশলী কর্মকর্তা এসএম রোকনুজ্জামান। ঢাকার মহানগর হাকিম ¯িœগ্ধা রানী চক্রবর্তী ওই আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মাহবুব উল আলম গ্রেফতারকৃত আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করেন।
রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট পরিদফতরের কর্মকর্তা। এরা হলেনÑ প্রকৌশলী কর্মকর্তা সামীউল হক, লুৎফর রহমান, মিলন চন্দ্র বিশ্বাস, জাকির হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী (প্রোডাকশন ভারপ্রাপ্ত) দেবেশ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী পরিদর্শন ও মান নিশ্চিতকরণ (ভারপ্রাপ্ত) এসএ সিদ্দিক ও মুখ্য প্রকৌশলী মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড সিস্টেম কন্ট্রোল (এমসিসি ভারপ্রাপ্ত) বিল্লাল হোসেন।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী বহনে ফ্লাইটে ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’র ঘটনায় গঠিত দুটি তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ৯ আসামির বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ঘটনা সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছেÑ ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনার পূর্বে উক্ত ফ্লাইটের জন্য নির্ধারিত উড়োজাহাজের অয়েল প্রেসার সেন্সরের প্রয়োজনীয় মেরামতের কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়। অয়েল প্রেসার সেন্সর এবং বি-নাট-এর অবস্থান কাছাকাছি। অয়েল প্রেসার সেন্সর মেরামত চলাকালীন উক্ত কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপের ফলে (অয়েল প্রেসার সেন্সরের পাশে) বি-নাট ঢিলা করা হয়েছে। এভাবে বি-নাট ঢিলা করা ছাড়াও মেরামত করার সময় সেখানে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে। এই কাজটি নাশকতামূলক। সিদ্দিকুর রহমান সরাসরি মেরামত কাজে জড়িত ছিলেন। এসএম রোকনুজ্জামান মেইনটেইন্স রিলিজ বইয়ে স্বাক্ষর করেন। সামীউল হক অভিযুক্ত সিদ্দিকুর রহমানকে নিযুক্ত করেন। লুৎফর রহমান মেরামত কাজের সময় সশরীরের উপস্থিত থাকলেও দায়িত্ব পালন করেন নি। একইভাবে মিলন চন্দ্র বিশ্বাসও দায়িত্ব পালন করেন নি। জাকির হোসেন সকল তথ্য সংগ্রহে নিয়োজিত ছিলেন। দেবেশ চৌধুরী ভিভিআইপি ফ্লাইটের ভিভিআইপি তল্লাশি ও অনুসন্ধান টিমের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নি। এসএ সিদ্দিক ভিভিআইপি ফ্লাইটে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর অনুযায়ী তিনি তার দায়িত্ব পালন করেন নি। ভিভিআইপি ফ্লাইটে চার সদস্যের একটি রক্ষণাবেক্ষণ টিম গঠন না করেই বিল্লাল হোসেন দায়িত্ব পালন করেছেন। এমন সব অভিযোগ আনা হয়েছে ওই ৯ আসামির বিরুদ্ধে।