‘সব নাগরিকের চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার রয়েছে’
গত ১৩ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সারাদেশ থেকে প্রায় ১৯ সহ¯্রাধিক চিকিৎসক সম্মেলনে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনস্থলে পৌঁছালে জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং জাতীয় ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আরও দুটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন এবং সারাদেশে আরও ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসাসেবা উন্নত করার পাশাপাশি গবেষণা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে স্থাপন করা হচ্ছে আরও দুটো নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং আর যে দুটো বিশ্ববিদ্যালয় হবে, সেখানে গবেষণাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। সেখানে মূল কাজ হবে, শুধু গবেষণা করা। সবারই চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী যেন দেশে চিকিৎসাবঞ্চিত না হন সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলেন, স্বাচিপের সদস্যরা জনকল্যাণে কাজ করবেন। সাধারণ মানুষকে সেবা দেবেন। নিজে কি পেলাম না পেলাম সেটি বড় কথা নয়, দেশকে কি দিতে পারলাম সেটিই বড় কথা। চিকিৎসার জন্য আসা রোগীর কাছে একজন চিকিৎসকের আচরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওষুধের চেয়ে একজন ডাক্তারের ইতিবাচক আচরণ রোগীকে অর্ধেক সুস্থ করে তোলে।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সময় দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমরা স্বাস্থ্যসেবা দেশের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই। তৃণমূল পর্যায়ে ১৩ হাজার ৮০০ হেলথ কমিউনিটি ক্লিনিক করেছি। প্রথমবার ক্ষমতায় এসে এই হেলথ কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করি। পরে বিএনপি ক্ষমতায় এসে তা বন্ধ করে দেয়। ভবিষ্যতে এসব হেলথ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো যাতে আর কেউ বন্ধ করতে না পারে সেজন্য আইন করে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান করে দেব। তিনি বলেন, আমরা প্রতিটি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করেছি, চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালও বৃদ্ধি করেছি। মেডিকেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি করেছি। ৩৪৫টি নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করেছি। চিকিৎসক, নার্সের সংখ্যা বাড়িয়েছি। নার্সদের বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। মেডিকেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১২ হাজার ৪০০ আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে। ৫ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছি। স্বাচিপের সভাপতি অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপির সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন এমপি, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক বদিউজ্জামান ভুইয়া ডাবলু, স্বাচিপের মহাসচিব ডা. ইকবাল আর্সলান, ডা. শফিকুর রহমান, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন প্রমুখ।
স্বাচিপ সম্মেলন শেষে ডা. ইকবাল আর্সানালকে সভাপতি ও অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল আজিজকে সাধারণ সম্পাদক করে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত নতুন কমিটিতে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বডুয়া, ডা. জামালউদ্দিন চৌধুরী, রোকেয়া সুলতানা ও অধ্যাপক ডা. আবদুর রউফ সর্দার।
যুগ্ম-সম্পাদক হয়েছেন অধ্যাপক ডা. জাকারিয়া স্বপন, অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়–য়া ও ডা. জুলফিকার লেনিন। কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকির।