সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না : বিদ্যুৎকেন্দ্র হবেই
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ। আসসালামু আলাইকুম এবং শুভ অপরাহ্ন।
আপনারা জানেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত স্থাপিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর প্রধান জ্বালানি প্রাকৃতিক গ্যাস। কিন্তু গ্যাসের মজুদ দ্রুত হ্রাস পাওয়ায় অদূর ভবিষ্যতে বিদ্যুৎকেন্দ্রে আর গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। মূল্য এবং প্রাপ্যতার দিক থেকে বিচার করলে কয়লা-ই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য জ্বালানি। তাই উন্নত দেশগুলো যেমনÑ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন, জাপান, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত তাদের মোট বিদ্যুতের ৪০ থেকে ৯৮ শতাংশ উৎপাদন করে কয়লা দিয়ে। বাংলাদেশে কয়লা দ্বারা উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ মাত্র ১ শতাংশের সামান্য বেশি (১.৩৩%)।
দেশের অব্যাহত বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ এবং যৌক্তিক মূল্যে গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর জন্য সরকার দেশে বেশ কয়েকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। রামপালে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র এগুলোর মধ্যে একটি।
কিন্তু রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে দেশের উন্নয়ন-বিরোধী একটি মহল বেশ কিছুদিন যাবত ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ও মনগড়া বক্তব্য এবং তথ্য দিয়ে এ প্রকল্প সম্পর্কে মানুষের মনে এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব এবং ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা করে আসছিল। অবশেষে গত ২৪ আগস্ট থলের বিড়াল বেরিয়ে এসেছে। এতদিন অন্তরালে থেকে ইন্ধন জোগালেও, ওই দিন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রেস কনফারেন্স করে এই অপপ্রচারে প্রকাশ্যে শামিল হয়েছেন।
আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, হঠাৎ করে বিএনপির এই অপপ্রচারে প্রকাশ্যে যোগ দেওয়ার পিছনে গভীর কোনো ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে। তা না হলে এই কেন্দ্রটির কাজ শুরু করার এতদিন পর এ ধরনের প্রতিক্রিয়া কেন আসবে? এই বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে যদি কোনো নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই থাকত, তা হলে তারা অনেক আগেই তা জনসম্মুখে প্রকাশ করত।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতাকারীরা বলতে চাচ্ছেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলে নাকি সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। আজকে আমি আপনাদের সামনে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে প্রমাণ করে দিব, বাস্তবায়নাধীন রামপাল-বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি করবে না।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
প্রথমেই আমাদের ঐক্যমতে আসতে হবে আমাদের বিদ্যুতের প্রয়োজন আছে কি-না। আমার মনে হয় না, দেশের কোনো নাগরিকই এক মিনিট বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় থাকতে চাইবেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সরকার এসেছে, সরকার গেছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনো টেকসই পরিকল্পনা কেউ গ্রহণ করেনি। আর আমাদের প্রাক্তন বিরোধী দল বিএনপির তো কোনো কথাই নেই। ১৯৯১ সালের পর দু-দুবার সরকারে থেকেছে; কিন্তু ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেনি। বরং ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে শুধুমাত্র খাম্বা কেনাবেচার ব্যবসা করেছে। খাম্বা বেচাকেনায় নাকি লাভের পরিমাণ বেশি ছিল।
১৯৯৬ সালে আমরা যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেই তখন দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৬০০ মেগাওয়াট। ১৯৯৬ সালের মাঝামাঝি আমরা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেই। পাঁচ বছর পর দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৪৩০০ মেগাওয়াট।
এরপর আবার বিএনপি ক্ষমতায় আসে। দুই বছর সামরিক-বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থাকে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণের বিপুল ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আমরা পেলাম মাত্র ৩২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সাত বছরে ১১০০ মেগাওয়াট নেই। চারদিকে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার, অসহ্য লোডশেডিং। কল-কারখানায় উৎপাদন বন্ধ। বিদ্যুতের অভাবে নতুন কল-কারখানা স্থাপনের কোনো উদ্যোগ নেই। ২০০৬ সালে খালেদা জিয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যুতের জন্য আন্দোলনরত গ্রামবাসীর ওপর গুলি চালিয়ে ১৪ জন মানুষকে হত্যা করে।
২০২১ সালের মধ্যে ২৪০০০ মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে। আমরা সেই লক্ষ্যমাত্রা ধরে স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি পথনকশা তৈরি করি।
স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় আমরা কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেই। কারণ একটি বড় প্লান্ট তৈরি করতে ৯-১০ বছর সময় লেগে যায়। আপনারা লক্ষ্য করেছেন, সে সময়ও একদল মানুষ এর বিরোধিতা করেছিল।
বিগত সাড়ে সাত বছরে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ১৫০০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছি। ১০৫টির মতো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ৭৮ শতাংশ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ১ কোটি ১২ লাখ নতুন গ্রাহকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু কুইক-রেন্টাল কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নয়। দীর্ঘস্থায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থায় কয়লার ব্যবহার ছাড়া কোনো উপায় নেই। অন্য বিকল্প পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। আমরা সেদিকেও অগ্রসর হচ্ছি। রূপপুরে ২৪০০ মেগাওয়াটের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। আমরা যখন স্থায়ী এবং টেকসই পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণের দিকে যাচ্ছি, আবারও সেই মহল এর বিরোধিতা শুরু করেছে।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রয়োজন সস্তা পরিবহন ব্যবস্থা। সেজন্য কয়লা খনির কাছাকাছি অথবা সমুদ্র উপকূল বা গভীরতা-সম্পন্ন নদীর তীরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়ে থাকে। আরেকটি বিবেচ্য দিক হচ্ছে, যতদূর সম্ভব কম সংখ্যক মানুষের স্থানান্তর করা। আমরা প্রাথমিকভাবে যেসব কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণের পরিকল্পনা করেছি সেগুলো স্থাপিত হবে রামপাল, মাতারবাড়ি, পায়রা, আনোয়ারা, খুলনা এবং মুন্সিগঞ্জে। দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, চীন এবং সিঙ্গাপুরÑ এসব বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তা করছে।
বিএনপি নেত্রীর বৃহস্পতিবারের বক্তব্য অনেকটা ‘মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশি’-এর মতো। ১৯৯৭ সালে আমাদের সরকারের উদ্যোগে সুন্দরবনকে ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করি।
আন্তর্জাতিকভাবে গভীর বনভূমির ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ না করার আইন আছে। আমাদের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের প্রান্ত সীমানা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে এবং বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হতে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই এলাকার বায়ুপ্রবাহ সুন্দরবনের বিপরীত দিকে। অর্থাৎ সামান্য পরিমাণ ক্ষতিকারক বায়বীয় পদার্থও যদি নিঃসরণ হয়, তবে তা সুন্দরবনের দিকে নয়, উল্টোদিকে প্রবাহিত হবে।
বিএনপি নেত্রী তার পুরো বক্তব্যে উদ্ভট, বানোয়াট এবং অসত্য উপাত্ত পরিবেশন করে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন।
আমি কতগুলো উদাহরণ দিচ্ছিÑ
* উনি বলেছেন ১ হাজার ৮৩৪ একর জমির ওপর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপিত হবে। আসলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জায়গা নেওয়া হয়েছে ৯১৫ একর। এর মধ্যে ৪৬৫ একরে মূল বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকবে। বাদ বাকি জায়গায় সোলার প্যানেল বসবে এবং সবুজায়ন (Green Belt) করা হবে।
* তিনি বলেছেন, যে স্থানে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে সেখানে নাকি জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৩৮২ জন। ৮ হাজারের বেশি মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। জমি তিন ফসলি। প্রকৃতপক্ষে এলাকাটিতে মানুষের কোনো স্থায়ী বসতি ছিল না। কোনো বসতি উচ্ছেদ করা হয়নি। নিচু, পতিত জমি মাটি ভরাট করে উঁচু করা হয়েছে।
* তিনি বলেছেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য পশুর নদী থেকে প্রতিঘণ্টায় ১৪৪ কিউসেক পানি নেওয়া হবে। ব্যবহারের পর সেই পানি নাকি পরিবেশ দূষণ করবে। তার এই বক্তব্য সঠিক নয়। পশুর নদীর পানিতে লবণ আছে। সেই পানি শোধন করে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার করা হবে। ব্যবহৃত পানি শীতল করে পুনরায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার করা হবে। কোনো দূষিত বা গরম পানি পশুর নদীতে ফেলা হবে না। যে পরিমাণ পানি উত্তোলন করা হবে তা অত্যন্ত নগণ্য। শুষ্ক মৌসুমে পশুর নদীর প্রবাহের মাত্রা (০.০৫%) দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ অর্থাৎ, ২ হাজার ভাগের ১ ভাগ পানির প্রয়োজন হবে।
* এই পশুর নদীর নাব্য বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত ড্রেজিং করা হবে। পানি চলাচল বাড়বে। নাব্য বৃদ্ধি পেলে মংলা বন্দরে নৌযান চলাচল বৃদ্ধি পাবে। আয় অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে।
* উনি ভারতে বনাঞ্চলের ২৫ কিলোমিটার মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আইনি বাধার কথা বলেছেন। ভারত একটি বিশাল আয়তনের দেশ। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশের সাথে তুলনা সঠিক নয়।
* কয়লা পরিবহনের সময় সুন্দরবন এলাকায় শব্দদূষণ, আলোদূষণ ইত্যাদির কথা তুলে ধরেছেন। আমরা এ বিষয়ে সম্পূর্ণ সজাগ। শব্দ ও আলোদূষণ সর্বনি¤œ পর্যায়ে রাখার জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। গভীর সমুদ্র হতে কাভার্ড বার্জে কয়লা পরিবহন করা হবে। বার্জে ব্যবহৃত হবে ঢাকনাযুক্ত কম শব্দযুক্ত ইঞ্জিন। ফলে পরিবেশ দূষণের কোনো সম্ভাবনা নেই। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা থাকবে। ১৪ কিলোমিটার দূরে শব্দ যাবে না। ২০০ মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
* উনি আমেরিকার টেক্সাসে একটি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের কথা বলেছেন। কিন্তু কত সংখ্যক কয়লাভিত্তিক প্লান্ট চালু আছে তা কি তার জানা আছে? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রায় ৪০ শতাংশ আসে কয়লা থেকে। সেখানে ৭ হাজারের বেশি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু আছে।
* তিনি বলেছেন, বিদ্যুতের দাম নাকি ৮.৮৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ অসত্য কথন। এই কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম নির্ধারিত হবে কয়লার দামের ওপর ভিত্তি করে।
* ভারতের ঘঞচঈ এবং আমাদের পিডিবির সমান অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বিদ্যুৎ কোম্পানি গঠন করা হয়েছে। উভয় সংস্থা ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ করবে। বাকি ৭০ শতাংশ দিবে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। এই ৭০ শতাংশ অর্থায়নের ব্যাংক গ্যারান্টর থাকবে বাংলাদেশ। অজ্ঞাতবশত, কেউ কেউ এটাকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছেন। গ্যারান্টর হওয়া মানে তো বিনিয়োগ করা নয়। কোনো কারণে যদি কোম্পানি ব্যর্থ হয়, তখন ক্ষতিপূরণের প্রশ্ন আসবে। সে রকম হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। একটা ব্যক্তিগত লোন নিতে গেলেও তো গ্যারান্টর লাগে। আর স্থাপনা যেহেতু বাংলাদেশে, গ্যারান্টর হতে তো কোনো দোষ দেখি না। বাংলাদেশের স্থাপনায় ভারত কেন গ্যারান্টর হতে যাবে?
* রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ মান বজায় রাখার জন্য আমরা বিশ্বের প্রথিতযশা ফার্ম জার্মানির ফিশনার (Fichtner) গ্রুপকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। কাজেই কাজের মান নিয়ে কোনো প্রশ্নের অবকাশ নেই। আমরা এ বিষয়ে কোনো আপস করব না।
* তিনি বলেছেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র না-কি লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা ধ্বংস করবে। এ কথা মোটেই সত্য নয়। বরং, এটি নির্মিত হলে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল মানুষের চুরি করে গাছ কাটার প্রয়োজন হবে না। এলাকার লাখ লাখ মানুষ উপকৃত হবে। কোম্পানি থেকে বছরে ৩০ কোটি টাকা সিএসআর ফান্ডে জমা হবে। তা দিয়ে এলাকার জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কাজ করা হবে।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
একটা কথা আমাদের স্মরণ রাখতে হবে উন্নত প্রযুক্তি অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করতে সক্ষম হয়েছে। রামপালে আমরা আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছি। একটি সাধারণ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা পোড়ানোর দক্ষতা যেখানে ২৮ শতাংশ, সেখানে আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল পাওয়ার প্লান্টের দক্ষতা ৪২-৪৩ শতাংশ। অর্থাৎ একই পরিমাণ কয়লা পুড়িয়ে আমরা দেড়গুণ বিদ্যুৎ পাব। সবচেয়ে গুণগত মানসম্পন্ন কয়লা এখানে ব্যবহার করা হবে। কয়লা আমদানি করা হবে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে।
দূষণ প্রতিরোধে সর্বাধুনিক যত ধরনের প্রযুক্তি পাওয়া যায় সেগুলো আমরা ব্যবহার নিশ্চিত করব। ফ্লু গ্যাস টেম্পারেচার, নাইট্রোজেন, সালফার-ডাই-অক্সাইড, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ইত্যাদির নিঃসরণ পর্যবেক্ষণের জন্য রিয়েল টাইম কন্টিনিউয়াস এমিশন মনিটরিং সিস্টেম (CEMS) থাকবে। যাতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। পাশাপাশি অন্যান্য দূষণ নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্রপাতি বসানো হবে।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইএসপি (Electro-static Precipitator) থাকবে যা উদগীরণকৃত ফ্লাই অ্যাসের ৯৯.৯৯ শতাংশ ধরে রাখতে সক্ষম হবে। এই ছাই সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে ব্যবহৃত হবে। একইভাবে এফজিডি (Flue gas desulphurization) স্থাপনের ফলে ৯৬ শতাংশ সালফার গ্যাস শোষিত হবে। এই সালফার গ্যাস থেকে জিপসাম সার তৈরি হবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চিমনির উচ্চতা হবে ২৭৫ মিটার। এই চিমনি দিয়ে যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বের হবে তা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১.৬ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। অন্য যে সমস্ত গ্যাস সামান্য পরিমাণে বের হবে সেগুলোর ঘনত্ব বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃত মাত্রার চেয়ে অনেক কম থাকবে।
যারা বলেন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিবেশ এবং প্রতিবেশের ক্ষতি করে, তাদের একটু বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘুরে আসতে বলছি। বড়পুকুরিয়া একটি সাব-ক্রিটিক্যাল পাওয়ার প্লান্ট। সাব-ক্রিটিক্যাল এবং আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্লান্টের মধ্যে বিশাল ব্যবধান রয়েছে। সাব-ক্রিটিক্যালের তুলনায় সুপারক্রিটিক্যালে ৪০ শতাংশ কার্বন, সালফার ও নাইট্রোজেন গ্যাস নিঃসরণ কম হয়। আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্লান্টে যে কোনো দূষণের মাত্রা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শুরু করি ২০০০ সালে। খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে তা বন্ধ করেনি। তখন পরিবেশের জন্য তো মায়াকান্না করেন নি।
বরং ফুলবাড়িতে ওপেনপিট কয়লা খনির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত মানুষের ওপর গুলি করে আধা ডজন মানুষ হত্যা করেছিল খালেদা জিয়া।
সাব-ক্রিটিক্যাল প্লান্ট ব্যবহার করলেও ঘনবসতি এবং সবুজে ঘেরা বড়পুকুরিয়া এলাকায় বিগত ১০ বছরে পরিবেশ এবং জনজীবনে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়েনি। উল্টো সেখানকার জমি আরও উর্বর হয়েছে। ফসল ভালো হচ্ছে।
বিশ্বের বহুদেশে বনভূমির মাঝখানে, শহরের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে।
আমি কিছু দেশের বনভূমির কাছাকাছি এবং ঘনবসতি এলাকায় স্থাপিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদাহরণ এবং ছবি আপনাদের দেখাতে চাই।
Ñ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া কোল পাওয়ার প্লান্ট, ক্ষমতা ১৩০০ মেগাওয়াট। ন্যাশনাল পার্কের ১ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার মোট বিদ্যুতের ৯৪ শতাংশ কয়লা থেকে উৎপন্ন হয়েছে।
Ñ কুয়াং নিন বিদ্যুৎকেন্দ্র, ভিয়েতনাম, ১২০০ মেগাওয়াট। হ্যালং বে (উইনেস্কো ঐতিহ্য)-এর মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে।
Ñ ইসোগো বিদ্যুৎকেন্দ্র, ইওকোহোমা, জাপান, ১২০০ মেগাওয়াট। আবাসিক এলাকার সন্নিকটে।
Ñ তাইচুং বিদ্যুৎকেন্দ্র, তাইওয়ান, ৫৫০০ মেগাওয়াট। শহরের প্রাণকেন্দ্রে।
Ñ জলিং বিদ্যুৎকেন্দ্র, জার্মানি, ৫০০ মেগাওয়াট। অ্যামপার নাটুরা ২০০০-এর বিশেষায়িত সংরক্ষিত এলাকা থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে।
Ñ হেইলব্রোন হ্যাফেন বিদ্যুৎকেন্দ্র, জার্মানি, ৭৫০ মেগাওয়াট। শহর সংলগ্ন এবং নদী তীরবর্তী।
Ñ ক্রাফটওয়ার্ক-মুরবার্গ বিদ্যুৎকেন্দ্র, জার্মানি, ১৬০০ মেগাওয়াট। শহর সংলগ্ন এবং নদীর তীরে।
Ñ রেইনহফেন ড্যাম্ফক্রাফট বিদ্যুৎকেন্দ্র, জার্মানি, ১৪৬২ মেগাওয়াট। শহর সংলগ্ন এবং নদীর তীরবর্তী।
এ রকম শত বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদাহরণ দেওয়া যাবে যেগুলো বনাঞ্চলে বা ঘন বসতি এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে। কোনো দেশে কেউ এসব নিয়ে এমন হৈচৈ করে না। কিন্তু আমাদের দেশের জ্ঞানপাপীরা হৈচৈ করছে। এরা কারা? এরা নিজেরা ভালো কিছু করতে পারে না, আবার কেউ ভালো কিছু করতে গেলে তাতে বাধা দেয়। রামপালে সুন্দরবনের কথা বলে বিরোধিতা করছে; কিন্তু আনোয়ারায় সে সুন্দরবন নেই। কিন্তু সেখানেও বিরোধিতা করছে কেন? এদের কথা শুনতে গেলে তো কোনো উন্নয়ন কাজেই হাতে নেওয়া যাবে না।
কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট যদি এতই দূষণ সৃষ্টি করত, তা হলে জাপানের মতো দেশ নতুন নতুন কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট তৈরির উদ্যোগ নিত না। কদিন আগে জাপান সরকার ৭০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে। চীনে প্রায় ৩০০ কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণকাজ চলছে।
আরেকটা কথা বলি। এই যে শত শত মানুষ জড় করে রোডমার্চ করে, সমাবেশ করে, এগুলো করতে টাকা কে দেয়? পকেটের পয়সা থেকে কেউ নিশ্চয়ই খরচ করে না। এরা বাংলাদেশ-বিরোধী শক্তির দাবার ঘুঁটি। তাদের এজেন্ট হয়ে কাজ করে। এসি লাগানো বাড়িতে থেকে, এসি গাড়িতে ঘুরে মানুষকে হয়তো সাময়িকভাবে বিভ্রান্ত করা যায়; কিন্তু মানুষ ঠিকই এসব মতলববাজদের এজেন্ডা বুঝতে পারে।
আপনারাই দেশপ্রেমিক, সুন্দরবন-প্রেমিক; আপনারাই শুধু পরিবেশ বোঝেন আর আমরা কিছুই বুঝি না! একটা কথা বলে রাখি, যদি এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে সুন্দরবনের সামান্যতম ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকত, তা হলে আমিই হতাম প্রথম ব্যক্তি যে এটা স্থাপনের বিরোধিতা করত।
সুন্দরবন সংরক্ষণের জন্য আমিই প্রথম ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছি। আজকে যে সুন্দরবন আমরা দেখছি ১০০ বছর আগেও এর ব্যাপ্তি অনেক বড় ছিল। ছোট হতে হতে আজকে এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। সুন্দরবন কি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য এভাবে সংকুচিত হয়েছে?
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি বা দূষণ ভৌগোলিকভাবে সীমাবদ্ধ নয়। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কোনো কারণ সুদূর আমেরিকায় ঘটলে, তার প্রভাব আমাদের এখানেও পড়বে। তা হলে আমেরিকা, জাপান, চীন, ভারতকে বলুন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ রাখতে।
সুন্দরবনের সুন্দরী গাছ মরে গেছে। মানুষ গাছপালা কেটে সাবাড় করেছে। মানুষের যাতে সুন্দরবনের ওপর নির্ভর করতে না হয়, সে জন্য আমরা তাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। সুন্দরবনে নতুন করে বৃক্ষরোপণের ব্যবস্থা করেছি। গাছ কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আমাদের নেওয়া পদক্ষেপের ফলে সুন্দরবনের আয়তন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাছের ঘনত্ব বাড়ছে।
উপকূল এলাকায় সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টি করা হয়েছে। নতুন জেগে ওঠা চরে বৃক্ষ রোপণ করে সেগুলোর ভূমিক্ষয় রোধ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আমরা আইন তৈরি করেছি। বাঘ সংরক্ষণে টাইগার অ্যাকশন প্লান গ্রহণ করেছি। আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রমের ফলে দেশে বনভূমির পরিমাণ ২০০৫-০৬ সালের ৭-৮ শতাংশ হতে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৪-১৫ সালে ১৭.০৮ শতাংশ হয়েছে।
পরিবেশ সংরক্ষণে আধা ডজনের বেশি আইন করেছি। পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য আমরা সংবিধানে মৌলিক পরিবর্তন এনেছি। সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীতে ১৮(ক) নামে একটি নতুন সংযোজন করেছি।
গঙ্গার পানি প্রত্যাহারের ফলে দেশের পশ্চিমাঞ্চল বিশেষ করে রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়ায় মরুকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। বিএনপি সরকার এ ব্যাপারে কিছুই করেনি। আমরা ১৯৯৬ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি চুক্তি সম্পাদন করে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করি। ফলে ঐ অঞ্চলে মরুকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়েছে। আমরা গড়াই নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং শুরু করেছিলাম ২০০১ সালে। বিএনপি এসে তা বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে আবার তা শুরু করেছি।
পরিবেশের নাজুকতা সম্পর্কে সামান্য হলেও আমার যেমন ধারণা আছে, তেমনি বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ক্ষমতার ওপরও আমার পূর্ণ আস্থা আছে। প্রযুক্তিকে আপনি অস্বীকার করতে পারেন না। আগে কলেরায়, কালাজ্বরে, গুটি বসন্তে হাজার হাজার মানুষ মারা যেত। মানুষের আবিষ্কৃত ওষুধে জীবনহানি বন্ধ হয়েছে।
কয়লা পোড়ালে ক্ষতিকর পদার্থ নিঃসরণ হবেÑ এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আমরা এমন সব অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, যেগুলো ক্ষতিকারক পদার্থগুলোকে পরিবেশে ছড়াতে দিবে না। উল্টো সেগুলোর কোনো কোনোটিকে রাসায়নিকভাবে পরিবর্তন করে মানুষের উপকারি বস্তুতে পরিণত করা হবে।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমি জানি এটা অনেকেরই সহ্য হচ্ছে না। বাংলাদেশ কেন এগিয়ে যাবে, বাংলাদেশ কেন স্বনির্ভর হবে, মানুষ কেন ভালো থাকবেÑ এটা তাদের সহ্য হচ্ছে না। এজন্যই একটা অজুহাত খোঁজার চেষ্টা করছে তারা।
যারা নিজেদের পরিবেশবাদী হিসেবে জাহির করেন, তাদের কাছে প্রশ্ন : পরিবেশ সংরক্ষণে একটা গাছ লাগিয়েছেন জীবনে? নিজের বিবেককে জিজ্ঞেস করুন, যা করছেন সেগুলো কি মানুষের মঙ্গল বয়ে আনবে? ভুল, মনগড়া, মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবেন না। আপনারা যেসব তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করছেন, সেগুলো ষাটের দশকের। বিশ্ব অনেক বদলে গেছে। প্রযুক্তির উন্নয়ন হয়েছে। এসব মান্ধাতা আমলের তথ্য দিয়ে জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।
২০১৩-১৫ সালে পেট্রলবোমা মেরে ১০০-এর বেশি মানুষ হত্যা করে, জঙ্গিদের মদদ দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষ মেরে, হলি আর্টিজান এবং শোলাকিয়ায় ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে, ফায়দা আদায় করতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেত্রী এবার ভাবছেন, একটা মওকা পাওয়া গেছে! রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলনকে উসকে দিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলবেন। জনগণকে অত বোকা ভাববেন না। জনগণ আপনার দূরভিসন্ধি বোঝে।
একটা নন-ইস্যুকে ইস্যু করে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করতে চায়, তা হলে তা কঠোর হাতে দমন করতে আমরা পিছপা হব না।
দেশের উন্নয়নের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য যা কিছু ভালো মনে হবে, আমি সেগুলো করবই। দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ, আপনারা আমার ওপর বিশ্বাস রাখুন। আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আমি এমন কোনো কাজ আগেও করিনি, ভবিষ্যতেও করব না, যা দেশের এবং দেশের মানুষের সামান্যতম ক্ষতি করে। রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়াদের অপপ্রচারে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না।
আসুন, আমরা সকলে মিলে এই বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলি। সবাইকে ধন্যবাদ।
খোদা হাফেজ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
[গত ২৭ আগস্ট গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পূর্ণ বিবরণ]