‘৭১ : দুই কণ্ঠ বীরের গল্প
জালাল ভাই যেটা বললেন, একটু আগে হুবহু মা’র মুখে শুনেছি সে কথা। ‘কী বলব, শুধু মনে পড়ে মুগ্ধ হয়ে শুনতাম তার কথা, আত্মস্থ করতাম প্রতিটি লাইন।’ এক বিবশ করে রাখা কণ্ঠ! ‘৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার পর আকাশ বাণীর সংবাদ পরিক্রমার ট্রান্সমিশনের সময়টা রীতিমতো ঠোটস্থ ছিল মুক্তিকামী প্রতিটি বাঙালীর। ‘… পড়ছি !বন্দোপাধ্যায়’। উৎসুক হয়ে শুনে যেত সবাই, তার রেশ রয়ে যেত অনেকক্ষণ। ফিসফিস আলোচনা। কাঁটাছেড়া। ‘নাহ্, দেবদুলাল যখন বলেছেন তখন ঠিকই বলেছেন’ জাতীয় নির্ভরতা।
এমনই আরেকজন এম.আর.আখতার মুকুল। যুদ্ধকালে !এয়ারে আসা মানেই প্রাণের ঝুকি নিয়ে রেডিওয় প্রায় কান মিশে ফেলা। মুকুল ভাই পড়তেন দারুণ এক রম্য কথিকা।! সে না শুনলে বোঝা যাবে না। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে, স্বাধীনতাকামী মানুষের কাছে দারুণ এক উদ্দীপনা ছিল এই চরমপত্র। তার ভাষায়, ‘এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমি প্রতিদিন গল্পের ছলে দুরূহ রাজনীতি ও রণনীতির ব্যাখ্যা করা ছাড়াও রণাঙ্গনের খবরাখবর অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পরিবেশন করেছি।… লক্ষণীয় যে চরমপত্র অনুষ্ঠানে আমি মোটামুটিভাবে ঢাকাইয়া তথা বঙ্গাল ভাষা ব্যবহার করলেও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে একাত্মতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আমি যথেচ্ছভাবে বিভিন্ন জেলার আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করেছি।’
ক’দিন আগে মাশীদ ১৬ ডিসেম্বরের এক অনুষ্ঠানের জন্য চেয়েছিল। তাৎক্ষণিক দিতে পারিনি। এখন পুরোটাই আমার আছে। জন্মযুদ্ধে থাকবে।